সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরামর্শ

সিঙ্গাপুরে তৈরি পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্য রফতানি হয়। উভয় দেশের বাণিজ্য বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি জানিয়েছেন, এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। উভয় দেশে ব্যবসায়ীরা পারস্পরিক দেশ সফর করে পণ্য নির্বাচন ও বাণিজ্য করতে পারেন।

বুধবার (১৮ মে) রাজধানীর সচিবালয়ে তার অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের নন-রেসিডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ডিরেক লোহ’র সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এ সময় সিঙ্গাপুরের নন-রেসিডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ডিরেক লোহ বলেন, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশকে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। পানি পথে পণ্য পরিবহনে সিঙ্গাপুর বাংলাদেশকে আরও সহযোগিতা দিতে পারে। পণ্যের অবাধ পরিবহন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে লজিস্টিকস, বন্দর ব্যবস্থাপনা ও শুল্ক কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম সহজ করতে সহায়তা দেওয়া সম্ভব। সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়নে সিঙ্গাপুরের পিএসএ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড সহযোগিতা প্রদান করতে পারে। এছাড়া সেমিকন্ডাকটর উৎপাদনে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। এতে পণ্য পরিবহনে ব্যয় কমানোর যাবে। বিভিন্ন শিল্পের উন্নত কাঁচামাল  সিঙ্গাপুর বাংলাদেশে সরবরাহ করে। ডিজিটাল অবকাঠামোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। হালাল পণ্য রফতানিতে সিঙ্গাপুরের সার্টিফিকেশনসহ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বিদ্যমান রয়েছে, বাংলাদেশকে অভিজ্ঞতার আলোকে সহযোগিতা করা সম্ভব। এজন্য সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

উল্লেখ্য, সাক্ষাৎকালে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে উভয় দেশের মধ্যে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ প্রতিষ্ঠা এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সফর বিনিময় করতে একমত পোষণ করা হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশ গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সিঙ্গাপুরে রফতানি করেছে ১১৬.৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর থেকে আমদানি করেছে ২,৪৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরে রফতানি বাড়াতে চায়। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি বাংলাদেশ পাট ও পাটজাত পণ্য,  চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য, ওষুধ এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রফতানি বৃদ্ধির বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। অনেকগুলোর কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। পৃথিবীর অনেক দেশ ইতোমধ্যে এখানে বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে এসেছে। সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, এনার্জি এবং অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করতে পারে, এতে তারা লাভবান হবেন। বাংলাদেশ ১৭ কোটি মানুষের একটি বড় বাজার, মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে, ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। এখানে পণ্য উৎপাদন করে সহজেই অন্য দেশে রফতানি করা সম্ভব। বাংলাদেশ সরকার এখন বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে।