ব্যাংকের চেয়ারম্যানরা আরও একবছর সহযোগী প্রতিষ্ঠানের পদে থাকতে পারবেন

ব্যাংকের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক যে নির্দেশনা দিয়েছিল, তা কার্যকর হওয়ার আগেই সেখান থেকে সরে এসেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলে খ্যাত কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অর্থাৎ, ব্যাংকের চেয়ারম্যান বা পর্ষদ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত সহায়ক কমিটিতে থাকা চেয়ারম্যান ওই ব্যাংকের সহযোগী বা অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের কোনও পদে থাকতে পারবেন না বলে যে নির্দেশনা দেওয়া হযেছিল, তা কার্যকর করার সময় এক বছর বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থাৎ, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যানদের পদত্যাগের যে নির্দেশনা ছিল, তার মেয়াদ ২০২৩ সালের ৩০ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। বুধবার (১ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে। এতে বলা হয়, সাবসিডিয়ারি কোম্পানি এবং ব্যাংকের অন্যান্য কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানগুলো দায়িত্বরত চেয়ারম্যান বা পরিচালক বা সদস্যের পদ একসঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে শূন্য করা হলে ওই প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনায় অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার অভাব সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। ফলশ্রুতিতে ব্যাংক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে। একারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা কার্যকরের মেয়াদ একবছর বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ যাদের পদত্যাগ করার কথা ছিল আগামী ৩০ জুনের মধ্যে, নতুন নির্দেশনার আলোকে তাদের পদত্যাগের মেয়াদ ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

এর আগে গত ১১ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বা পর্ষদের সহায়ক কোনও কমিটির চেয়ারম্যান ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি বা ফাউন্ডেশনের পরিচালনায় থাকতে পারবেন না। পরিচালক হিসেবে কেউ একবছর দায়িত্ব পালনের পর আর ওই ব্যাংকের কোনও পদে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।  এ ধরনের কেউ থাকলে তাকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পদত্যাগ করতে হবে।

ওই নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, ব্যাংকের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় স্বার্থের সংঘাত পরিহার, নিরপেক্ষতা, পেশাগত মান ও সুশাসন নিশ্চিত করতে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৩ (১) (ক) ধারায় কেউ ব্যাংকের পরিচালক হলে একই সময়ে তিনি অন্য ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বিমা কোম্পানির পরিচালক হওয়ার ওপর বিধিনিষেধ রয়েছে।

ব্যাংকের পরিচালনায় শৃঙ্খলা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে গত বছরের ১২ মে অপর এক নির্দেশনার মাধ্যমে আরও কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। সুষ্ঠুভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যবস্থাপনা কর্তৃক নিজ-নিজ দায়িত্ব পালনে যথাযথ ভূমিকা পালন আবশ্যক। ফলে ব্যাংক পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা পরিহার হওয়া বাঞ্ছনীয়। মে মাসে জারি করা সার্কুলার আরও বলা হয়েছে, কোনও ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বা পর্ষদ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত সহায়ক কমিটি যথা- নির্বাহী কমিটি, অডিট কমিটি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত ব্যক্তি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি বা ব্যাংকের অর্থায়নে গঠিত ও পরিচালিত প্রতিষ্ঠান বা ফাউন্ডেশনের পরিচালনা পর্ষদ বা গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান, পরিচালক বা সদস্য হতে পারবেন না। কেউ এরকম থাকলে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে। এছাড়া কোনও ব্যক্তি ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক, মনোনীত, প্রতিনিধি বা স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে ন্যূনতম এক বছর দায়িত্ব পালন করলে মেয়াদপূর্তি, অবসর বা অব্যাহতির পর আর ওই ব্যাংকের নিয়মিত বা চুক্তিভিত্তিক পদে নিযুক্ত হতে পারবেন না।