তুরস্কের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বেশি হারে বিনিয়োগের আহ্বান

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও তুরস্কের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাংলাদেশের অনুকূলে রয়েছে। তবে তা তরান্বিত করার জন্য দুই দেশের উদ্যোক্তাদের আরও বেশি হারে বিনিয়োগে উৎসাহিত হতে হবে।’

তুরস্ক সফররত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইস্তাম্বুল চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত ‘তুরস্ক-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) তুরস্কের ইস্তাম্বুল চেম্বার অব কমার্সের কার্যালয়ে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ-তুরস্কের মধ্যকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা বৃদ্ধিতে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের নেতৃত্বে ৮৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদলর বর্তমানে তুরস্ক সফর করছে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে তুরস্ক চেম্বারের নির্বাহী কমিটির সদস্য বুরহান পোলাত তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়, কারণ দেশটি গত কয়েক দশকে ব্যবসা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নে বাজার সম্প্রসারণের পাশাপাশি রপ্তানিমুখী পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপর জোর দেন।

বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের জন্য তুরস্ক একটি অপার সম্ভাবনাময় বাজার হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ চামড়া, ওষুধ, তৈরি পোশাক ও হালকা প্রকৌশল শিল্পে আশাব্যঞ্জক উন্নতি করেছে। এ ছাড়া ও তিনি দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করার আহ্বান জানান। তিনি দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের প্রস্তাব করেন।

ইস্তাম্বুল চেম্বার অব কমার্স ছয় লক্ষাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সংবলিত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য সংগঠন। বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের এ দেশে ব্যবসা সম্প্রসারণে ইস্তাম্বুল চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও তুরস্কের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৮৭১.৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যদিও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাংলাদেশের অনুকূলে রয়েছে। তবে তা তরান্বিত করার জন্য দুুই দেশের উদ্যোক্তাদের আরও বেশি হারে বিনিয়োগে উৎসাহিত হতে হবে কারণ বর্তমান বাণিজ্যের পরিমাণ মোটেও সন্তোষজনক নয়।

তিনি বলেন, তুরস্ক বাংলাদেশের জন্য ২৩তম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্যস্থল। বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগকারী দেশগুলোর মধ্যে তুরস্ক ২৯তম বৃহত্তম দেশ যে দেশের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ৩০.৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, ডি-৮ ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কার্যকর অর্থনৈতিক যোগাযোগ স্থাপনে বাংলাদেশ ও তুরস্ক যৌথভাবে উদ্যোগ নিতে পারে।

বাংলাদেশের শিল্পখাতের আধুনিকায়নে তুরস্কের প্রযুক্তি সহায়তা প্রদান, এসএমই খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি, যৌথ গবেষণা কার্যক্রম এবং এগ্রো ভেলু চেইনের উন্নয়নে তুরস্কের বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি হারে বিনিয়োগের আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পণ্য আমদানি করার অনুরোধ করেন তিনি।

বিজনেস ফোরাম শেষে ঢাকা চেম্বারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইস্তাম্বুল চেম্বারের প্রায় ৩৫০টির বেশি সদস্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার বিটুবি ম্যাচ-মেকিং অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে দুই দেশের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ সম্ভাবনা, বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করেন। বিটুবি সেশনে অংশগ্রহণকারী তুরস্কের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগের ইতিবাচক আগ্রহ প্রকাশ করেন।
 
পরে ইস্তাম্বুল চেম্বারের সভাপতি সেকিব এভডাচিভ ও ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের দ্বিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।