চালের দাম বেড়েছে

আবারও বেড়েছে মোটা চালের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মোটা চালের কেজিতে বেড়েছে দুই টাকা। শুধু তাই নয়, মধ্যবিত্তদের পছন্দের মাঝারি ধরনের চালের দামও বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, গত সপ্তাহে যে মোটা চাল (স্বর্ণা ও চায়না ইরি) ৫০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যেত, চলতি সপ্তাহে সেই একই চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজি দরে। আর  মাঝারি ধরনের যে চাল গত সপ্তাহে ৫২ টাকা কেজি দরে পাওয়া যেত, এই সপ্তাহে সেই একই চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকা কেজি দরে। এছাড়া  মাঝারি মানের চাল (বিআর ২৮) কেজি-প্রতি ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরু চাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮৫ টাকা পর্যন্ত। সরু চালের মধ্যে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের বিক্রি বেশি। ভালো মানের মিনিকেট ৭৫ টাকা, আর নাজিরশাইল কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৮৫ টাকা দরে। বাজারে আটাশ চালের কেজি ৬০ টাকা, গুটি স্বর্ণা ৫৫ টাকা, স্বর্ণা ৫০ টাকা।

চিনিতে ৬ টাকা বাড়িয়ে  নতুন দর নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এর ফলে খোলা চিনি প্রতি কেজি ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে খোলা ময়দা। যদিও বিশ্ববাজারে গমের দাম কমেছে। কিন্তু দেশের বাজারে ময়দার দাম এখনও বাড়তি। গত সপ্তাহে যে খোলা ময়দা বিক্রি হয়েছে ৬২ টাকা কেজি দরে, এই সপ্তাহে সেই একই ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি। অর্থাৎ গত এক সপ্তাহে প্রতি কেজিতে বেড়েছে তিন টাকার মতো।

পেঁয়াজ (ছবি: ফোকাস বাংলা)এছাড়া খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৩ থেকে ৫৫ টাকায়। প্যাকেটজাত আটার দুই কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২৫ টাকায়।

এছাড়া পেঁয়াজের কেজি জাত ও মানভেদে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, রসুন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, আদা ১৯০-২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন,  গত সপ্তাহে ৫ লিটার বোতলজাত যে সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৯১০ টাকা, এই সপ্তাহে সেই একই বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৮৭০ টাকা। এছাড়া গত সপ্তাহে যে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৯৪৫ টাকা। এই সপ্তাহে সেই একই বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯১০ টাকা।

গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে পাম (খোলা ও সুপার) অয়েলের দাম লিটারে কমেছে ১৩ থেকে ১৫ টাকা। গত সপ্তাহে খোলা পাম অয়েলের দাম ছিল প্রতি লিটার ১২৫ টাকা, এই সপ্তাহে সেই একই পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১১২ টাকা লিটার। গত সপ্তাহে যে সুপার পাম অয়েলের ছিল ১৩৮ টাকা, এই সপ্তাহে সেই একই পাম অয়েলের বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা।

সয়াবিন তেল

যদিও এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ১৯২ টাকা। এ প্রসঙ্গে মানিকনগর এলাকার দোকানদার নাজমুল হক বলেন, নতুন দাম নির্ধারণ হলেও তাদের দোকানে আগের বাড়তি দামে কেনা পণ্য রয়ে গেছে।  নতুন দামের পণ্য এখনও এসে পৌঁছায়নি। ফলে তারা আগের দামেই তেল বিক্রি করছেন তিনি।

পাম তেলে ৮ টাকা কমিয়ে নতুন দর নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এর আগে প্রতি লিটার সয়াবিনে ১৪ টাকা কমিয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৮ টাকা নির্ধারণ করলেও শুক্রবার (৭ অক্টোবর) বাজারে খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ থেকে ১৯২ টাকা কেজি দরেই বিক্রি হতে দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা, দুই লিটার ৩৮০ টাকা, ৫ লিটার কোথাযও কোথাযও ৯৪৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল কেজি ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহে ১৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা মসুর ডাল (ছোট দানা) এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি দরে। আর  ১৪০ টাকা কেজি দরের (নেপালি) মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা দরে। এছাড়া মোটা ডাল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১০৫  টাকায়।

চড়া রয়েছে সবজির বাজার। বাজারে প্রতি কেজি করলা ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, পটল, ঢেড়স ও শসা ৬০ টাকা করে, টমেটো ১৪০, গাজর ১২০-১৩০, পেঁপে, কাচকলা ও আলু ৩০ টাকা করে এবং বরবটি ৬০-৭০ টাকা করে বিক্রি করছেন সবজি ব্যবসায়ীরা। শীতের সবজি হিসেবে পরিচিত শিমের দাম কমেছে ২০ টাকা। গত সপ্তাহে ১ কেজি শিম বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকায়, যা এ সপ্তাহে নেমেছে ১৪০ টাকায়। এছাড়া ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা ও মুলা প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে শাকের দামও চড়া। প্রতি আঁটি লালশাক ২৫ টাকা, ডাঁটাশাক ২৫ টাকা আর পুঁইশাক বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। এছাড়া প্রতি পিস লাউ ৫০-৭০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বাজারআগের সপ্তাহের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম, মাছ, ব্রয়লার মুরগিও। মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা। এছাড়া লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা কেজি এবং সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মাংসের দাম। গরুর মাংস ৭০০ টাকা, আর খাসির মাংস ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০ টাকা, রুই ২৫০ টাকা, পাঙাস ১৬০ টাকা, সিলভার কার্প ১৪০ টাকা, কৈ ২২০-২৫০ টাকা, শিং মাছ আকার ভেদে ৫০০-৭৫০ টাকা কেজি এবং চিংড়ি মাছ ৬০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া টাটকিনি, টেংরা  বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। পাবদা মাছ (বড়) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। ছোট পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে। বোয়াল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, কাতল ৩৮০ টাকা, শোল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, আইড় মাছ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।