চামড়া খাতে আন্তর্জাতিক মানের বর্জ্য শোধনাগার  জরুরি: এফবিসিসিআই 

দেশি চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণের মাধ্যমে চামড়া খাতের বিকাশে আন্তর্জাতিক মানের কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার বা সিইটিপি অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

রবিবার (২২ জানুয়ারি) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘চামড়া বাংলাদেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় একটি খাত। শতভাগ মূল্য সংযোজন হচ্ছে এ খাতে। চামড়াজাত পণ্য তৈরির জন্য কাঁচা চামড়া আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে; অথচ উন্নত ব্যবস্থাপনার অভাবে পঁচে নষ্ট হচ্ছে দেশীয় কাঁচা চামড়া।’ দ্বিতীয় বৃহত্তম এ রফতানি খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সাভারের হেমায়েতপুরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) এর আন্তর্জাতিক মান ও দ্রুত এর শতভাগ বাস্তবায়ন জরুরি বলে জানান মো. জসিম উদ্দিন।

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বিকাশ ঘটাতে কমপ্ল্যায়ান্স ও সার্টিফিকেশন জরুরি বলে মনে করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। এ খাতে আধুনিকায়নে তরুণদের অন্তর্ভুক্তি দরকার বলেও জানান তিনি।  

দেশীয় চামড়া সংরক্ষণে প্রতিটি জেলায় একটি করে হিমাগার ও আধুনিক পশু জবাইখানা বা স্লটার হাউস নির্মাণ করা যেতে পারে বলে মত দেন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, যথাযথভাবে পশু জবাই পরিচালনা করা গেলে স্লটার হাউসও একটি ভালো ব্যবসার উৎস হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এফবিসিসিআইর সহসভাপতি  আমিন হেলালী বলেন, ‘চাঁমড়া সংরক্ষণে হিমাগারের ব্যবহার বাড়ানো গেলে চাহিদা অনুযায়ী বছরের যেকোনও সময় কাঁচা চামড়ার যোগান দেওয়া সম্ভব।’ 

সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ শাহীন আহমেদ বলেন, ‘চামড়া খাত একটি সম্ভাবনাময় খাত। মোট চাহিদার প্রায় ৬০ ভাগ কাঁচা চামড়া আসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে, কিন্তু উন্নত ব্যবস্থাপনার অভাবে সেগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয় না।’ দেশী কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের মাধ্যমে আমদানি কমাতে আধুনিক স্লটার হাউস বা পশু জবাইখানার ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত হিমাগার নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও লেদারেক্স ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাজমুল হাসান সোহেল। চামড়া খাতের উন্নয়নে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানতগুলোর সার্টিফিকেশন ব্যবস্থা ও পশু জবাই স্থানগুলোর বাণিজ্যিকীকরণ করার আহ্বান জানান তিনি।

বৈঠকে আরও কথা বলেন— নাসিব সভাপতি মির্জা নুরুল গণি শোভন, কমিটির কো-চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন মজুমদার, অনিরুদ্ধ কুমার রয়সহ কমিটির অন্য সদস্যরা। চামড়া শিল্পকে বাঁচাতে লবনের মূল্য কমানো, স্থানীয়ভাবে রাসায়নিকের কারখানা নির্মাণ, বন্ড লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজীকরণ করার দাবি জানান বক্তারা।

এসময় এফবিসিসিআইর পরিচালক হাফেজ হারুন, মো. নাসের, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।