রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম নাগালে থাকবে বলে আশা আমদানিকারকদের

পবিত্র রমজান মাসে তেল, গম, ছোলা, চিনি, পেঁয়াজ, ডাল ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই ভোগ্যপণ্যের দামও ওঠানামা করে। এবারের আসন্ন রমজান উপলক্ষে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে।

পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে পরিবহন জাহাজ ও ডলারের সংকট এবং এলসি খোলার জটিলতাও ইতোমধ্যে নিরসন হয়েছে। তাই রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম ভোক্তাদের নাগালের মধ্যে থাকবে বলে আশা আমদানিকারকদের।

শনিবার (১৮ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানায় এস আলম গ্রুপ।

দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদার প্রায় ২২ লাখ মেট্রিক টনের মধ্যে রমজান মাসে সারা দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টনের মতো। এ চাহিদার প্রায় ৬৫ শতাংশই হচ্ছে পাম ওয়েল। বাকি ৩৫ শতাংশ সয়াবিন তেল। রমজানে ভোজ্যতেলের জোগান স্বাভাবিক রাখতে আমদানিকারকরা পাম ওয়েল ও সয়াবিন তেল আমদানি শুরু করেছেন।

দেশের অন্যতম শীর্ষ আমদানিকারক এস আলম গ্রুপ রমজান উপলক্ষে ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল— এই তিন মাসে ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত পাম ওয়েল আমদানি করছে। এ ছাড়া চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রতিষ্ঠানটি ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে আমদানি করছে অতিরিক্ত আরও ১৫ হাজার ৮৬ মেট্রিক টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, যা দেশের চাহিদার প্রায় ৫০ শতাংশ এবং রমজানে তেলের সরবরাহ ও বাজার মূল্য সহনীয় রাখতে সাহায্য করবে।

এ ছাড়া দেশের বাজারে বছরে প্রায় ৬৩ লাখ মেট্রিক টন (দেশীয় উৎপাদন ব্যতীত) গমের চাহিদা রয়েছে। প্রতি মাসে প্রয়োজন হয় প্রায় ৫ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন গম। রমজানে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। এস আলম গ্রুপ রমজান উপলক্ষে ৩ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করছে, যা মোট চাহিদার প্রায় ৬৮ শতাংশ। এ ছাড়া ২০ মার্চের মধ্যে দুটি জাহাজের মাধ্যমে ১ লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টন গম দেশে আসবে।

দেশে চিনির বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে রমজানে চাহিদা থাকে প্রায় ২ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টনের মতো। এস আলম গ্রুপ রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমদানি করছে প্রায় ৩ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন চিনি অর্থাৎ চাহিদার প্রায় সম্পূর্ণ অংশ। বর্তমানে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চিনি নিয়ে ডেনসা টাইগার নামে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসরত অবস্থায় আছে এবং আমিরা মিরো নামে এস আলম গ্রুপের আরও একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের অভিমুখে আছে, যা শিগগিরই বন্দরে পৌঁছাবে।

একইভাবে বছরে ভোক্তাদের ছোলার প্রয়োজন আছে ১ লাখ ৩৬ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে রমজানেই ছোলার চাহিদা থাকে প্রায় ৯১ হাজার মেট্রিক টনের মতো। এস আলম গ্রুপ রমজানে ৪৫ হাজার মেট্রিক টন ছোলা আমদানি করছে, যা মোট চাহিদার ৫০ শতাংশ।

রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের আমদানি প্রসঙ্গে এস আলম গ্রুপের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আকতার হাসান ও মোহাম্মদ রফিক বলেন, ‘পবিত্র রমজানে প্রয়োজনীয় পণ্যের অধিকাংশই আমাদের আমদানি করতে হয়। ডলার সংকট, এলসি জটিলতা, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এসব নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও সরকারি সহযোগিতায় আমরা বেশির ভাগ পণ্যেরই আমদানি স্বাভাবিকভাবেই করতে পেরেছি। আশা করি দেশের মানুষ রমজানে বাড়তি কোনও ভোগান্তিতে পড়বেন না।’

তারা বলেন, ‘রমজানে সহনীয় দামেই তেল, গম, ছোলা, চিনিসহ পণ্যগুলো কিনতে পারবেন। এস আলম গ্রুপ সর্বদাই দেশের মানুষের ভোগান্তি নিরসনে পাশে থাকবে।’