বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলোর সহযোগিতা চায় বিজিএমইএ

পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো হয়েছে, সেই বিষয়ে অ্যাডিডাস, হুগো বস ও পুমার মতো আন্তর্জাতিক ১৬টি বৈশ্বিক ব্র্যান্ডের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে পোশাকশিল্প মালিকদের সমিতি বিজিএমইএ।

পাশাপাশি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের ন্যূনতম মজুরি সম্পর্কে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এসব ব্র্যান্ড যে চিঠি দিয়েছিল, সে ব্যাপারেও নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে বিজিএমইএ।

এসব ব্র্যান্ডের প্রতিনিধি হিসেবে আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনকে (এএএফএ) লেখা চিঠিতে বিজিএমইএ বাড়ানোর  বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করেছে।

মার্কিন সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট নেইট হারমানকে উদ্দেশ করে লেখা চিঠিতে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বাংলাদেশে যে পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো হয়েছে, সে বিষয়ে এই ১৬টি বৈশ্বিক ব্র্যান্ড ও এএএফএর’ সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবহিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

১৬টি ব্র্যান্ড হলো— এইও ইনকরপোরেশন, অ্যাবারক্রম্বি অ্যান্ড ফিচ, অ্যাডিডাস, অ্যামার স্পোর্টস, বারটন, গ্যাপ ইনকরপোরেশন, হুগো বস এজি, কেএমডি ব্র্যান্ডস, লেভি স্ট্রস অ্যান্ড কোম্পানি, লুলুলেমন, পাতাগোনিয়া, পুমা এসই, পিএইচভি করপোরেশন, স্যানমার, আন্ডার আরমার ও এএলডিআই সাউথ গ্রুপ।

ফারুক হাসান বলেছেন, মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি ক্রেতারা যেন যথাযথ বিবেচনা ও সহমর্মিতার সঙ্গে আমলে নেন। চিঠিতে তিনি বলেন, দেশের পোশাকশিল্প মালিকরা নতুন মজুরি বাস্তবায়ন করবেন। সে জন্য ক্রেতাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে যেসব পণ্য জাহাজীকরণ করা হবে, নতুন মজুরির আলোকে তার মূল্য সমন্বয় করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া এখন থেকে যত ব্যবসায়িক চুক্তি করা হবে, তা এই নতুন ন্যূনতম মজুরির সাপেক্ষে করতে হবে বলে উল্লেখ করেন বিজিএমইএ সভাপতি।

চিঠিতে নেইট হারমানকে জানানো হয়, পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৫০০ টাকা বা ১১৩ দশমিক ৬৩ মার্কিন ডলার। শ্রমিকদের মোট মজুরি বেড়েছে ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। এবার শ্রমিকদের মূল মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে মোট মজুরির ৬৩ দশমিক ৪১ শতাংশ। এর ফলে শ্রমিকদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়বে।

গত ১১ অক্টোবর ১৬টি ব্র্যান্ড পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর ইস্যুতে কিছু বিষয় আমলে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেয়।

১৬টি ব্র্যান্ডের পরামর্শ ছিল এ রকম— ন্যূনতম মজুরি এমন পর্যায়ে উন্নীত করা, যা শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট এবং মৌলিক চাহিদা পূরণের পর যেন শ্রমিকেরা নিজেদের বিবেচনা অনুসারে কিছু ব্যয় করতে পারেন, তেমন মজুরি দেওয়া। মূল্যস্ফীতির চাপ বিবেচনা করেই তা নির্ধারণ করতে হবে। ব্র্যান্ডগুলোর দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, পোশাকশ্রমিকদের গড় মাসিক নিট মজুরি ২০১৯ সালের পর সমন্বয় করা হয়নি, যদিও এই সময় মূল্যস্ফীতির হার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

একইসঙ্গে শ্রমিকদের দর-কষাকষির অধিকার প্রয়োগে প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় ১৬টি ব্র্যান্ড। নতুন মজুরি নির্ধারণের পর তারা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের অঙ্গীকার করে।