আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার ওপর স্টাফ-লেভেল পর্যায়ের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ নতুন করে প্রায় ১.৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছে। তবে এ অর্থ ছাড়ের আগে কিছু পূর্ব শর্ত পূরণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে সংস্থাটি।
ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফের মিশনপ্রধান পিটার পাপাগেওর্গিও বুধবার (১৪ মে) এক বিবৃতিতে বলেছেন, অর্থনৈতিক চাপ ও বৈদেশিক অর্থায়নের ঘাটতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার ৭৬২ মিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত সহায়তা চেয়েছে—যা আইএমএফ পরিচালিত এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) ও এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ)-এর আওতায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই অর্থ ছাড় হলে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ইসিএফ ও ইএফএফ-এর আওতায় মোট ৪.১ বিলিয়ন ডলার এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় অতিরিক্ত ১.৩ বিলিয়ন ডলার সহায়তা পাবে।
চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৩ শতাংশে নামলেও বছরের দ্বিতীয়ার্ধে তা কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩.৮ শতাংশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এক দশমিকের কাছাকাছি চলে যাওয়া মূল্যস্ফীতিও কিছুটা হ্রাস পেয়ে অর্থবছর শেষে ৮.৫ শতাংশে নামবে বলে আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে।
আইএমএফ বলছে, এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজস্ব আদায়ে সংস্কার, ট্যাক্স অব্যাহতির পর্যালোচনা, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো, মুদ্রানীতি কড়াকড়ি করা এবং বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক করা জরুরি।
বিশেষ করে ব্যাংক খাতে দুর্বল প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে কাঠামোগত সংস্কার ও নতুন আইন প্রয়োগের ওপর জোর দিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা ও সুশাসন বাড়ানোর পাশাপাশি জলবায়ু অভিযোজন সংক্রান্ত বিনিয়োগ ও সংস্কারে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আইএমএফের এই চুক্তি এখন সংস্থার নির্বাহী বোর্ডে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। পূর্বশর্ত হিসেবে রাজস্ব আহরণ ও বিনিময় হার সংস্কার পুরোপুরি বাস্তবায়নের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হবে।