রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ব্যাংক খাতের চাপে কমলো প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে এনেছে। সংস্থাটি বলছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, যা পূর্বাভাসের ৬ দশমিক ৫ শতাংশের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

ওয়াশিংটনভিত্তিক এই ঋণদাতা সংস্থাটি বলছে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, কড়াকড়ি আর্থিক ও রাজস্ব নীতি, বাণিজ্যে বাড়তি প্রতিবন্ধকতা এবং ব্যাংকিং খাতে চাপ বৃদ্ধির কারণে এই সংশোধন আনতে হয়েছে।

সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ড সম্প্রতি বাংলাদেশের জন্য ১.৩ বিলিয়ন ডলারের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি অনুমোদন করেছে। একইসঙ্গে অতিরিক্ত ৮০০ মিলিয়ন ডলারের অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে আইএমএফের ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের আওতায় বাংলাদেশ মোট ২.১ বিলিয়ন ডলার পেতে যাচ্ছে।

আইএমএফ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে সংঘটিত রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সরকার পরিবর্তনের ফলে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হয়। যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে, তারপরও সামগ্রিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দুর্বল থেকে গেছে।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষে দেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ, যা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রাথমিক ৩.৯৭ শতাংশ পূর্বাভাসের চেয়েও কম।

অপরদিকে, মূল্যস্ফীতি নিয়েও পূর্বাভাস সংশোধন করেছে আইএমএফ। সংস্থাটির তথ্যমতে, চলতি অর্থবছর শেষে (২০২৪-২৫) বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি হবে ৯.৯ শতাংশ। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তা কমে ৬.২ শতাংশে নামবে বলে মনে করছে তারা। যদিও এর আগে এপ্রিলে প্রকাশিত বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রেক্ষিত প্রতিবেদনে সংস্থাটি মূল্যস্ফীতির হার ৫.১৮ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল

উল্লেখ্য, সরকারের নিজস্ব অনুমান অনুযায়ী আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ, আইএমএফ-এর সংশোধিত পূর্বাভাস সরকারের অনুমানের কাছাকাছি হলেও, সামষ্টিক অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ এবং কাঠামোগত দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।