বাংলাদেশে ২১ বছর বয়সী নাগরিকরা এখন থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে স্টার্টআপ লোন নিতে পারবেন। বুধবার (৯ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক ‘স্টার্ট-আপ লোন সংক্রান্ত মাস্টার সার্কুলার’ জারি করে এ সুবিধা চালু করেছে।
নতুন সার্কুলারে বলা হয়েছে, উদ্যোক্তারা মেয়াদি বা চলতি মূলধন ঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে অর্থায়ন পাবেন, যা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রযোজ্য হবে। এ সুবিধা বিদ্যমান ও নতুন— উভয় ধরনের স্টার্টআপের জন্য প্রযোজ্য হবে। তবে বিদ্যমান স্টার্টআপের নিবন্ধনের সময় থেকে সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানগুলো এ সুবিধার আওতায় আসবে।
সুবিধার পরিধি ও অর্থায়ন কাঠামো
সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়, স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের ঋণ ও বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলো এই তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে পারবে।
আগে সর্বোচ্চ ঋণসীমা ছিল ১ কোটি টাকা, যা এখন বাড়িয়ে ২ কোটি থেকে ৮ কোটি টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইক্যুইটি বিনিয়োগের সুযোগ
নতুন নীতিমালায় শুধু ঋণ নয়, বরং স্টার্টআপে ইক্যুইটি বিনিয়োগের পথও খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি তফসিলি ব্যাংকের নিজস্ব ‘স্টার্টআপ ফান্ড’ থেকে এখন ইক্যুইটি বিনিয়োগ করা যাবে।
এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেখানে ব্যাংকগুলো তাদের স্টার্টআপ ফান্ডের অর্থ ইক্যুইটি হিসেবে বিনিয়োগ করবে। এই কোম্পানির প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসএমই ও স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগ।
ব্যাংক ও এনবিএফআইয়ের ভূমিকা
ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোকে নিজস্ব তহবিল থেকেও স্টার্টআপে ঋণ ও বিনিয়োগ করতে হবে। তবে নতুন সার্কুলার জারির পর থেকে ব্যাংকের নিজস্ব স্টার্টআপ ফান্ড থেকে আর ঋণ দেওয়া যাবে না। কেবল ইতোমধ্যে অনুমোদিত ঋণের অর্থ ছাড় করা যাবে।
উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে ভূমিকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভাষ্য মতে, বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো দেশের প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান এবং উদ্ভাবনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। তাই উচ্চ সম্ভাবনাময় উদ্যোগগুলোকে আরও গতিশীল করতে নীতিমালায় সময়োপযোগী পরিবর্তন আনা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, এ পদক্ষেপ দেশের উদ্যোক্তাবান্ধব পরিবেশকে আরও শক্তিশালী করবে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।