এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকায় রাজধানীতে বেড়েছে গ্যাস সংকট

গ্যাসসাগরের নিচে পাইপলাইনের সমস্যার কারণে চট্টগ্রামে এলএনজি সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে বন্দর নগরীর পাশাপাশি রাজধানীতেও গ্যাস সংকট বাড়ছে। উত্তরা, আজিমপুর, পান্থপথ, রামপুরা, বনশ্রী, মিরপুরসহ পুরনো ঢাকায় দিনের বেলা গ্যাসের চাপ এত কম যে রান্নাই করা যাচ্ছে না।

জ্বালানি বিভাগের এক কমকর্তা জানান, শনিবার (৩ নভেম্বর) রাতে সাগরের নিচে পাইপলাইনের সমস্যার কারণে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে চট্টগ্রামে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সেই ঘাটতি মেটাতে জাতীয় গ্রিডেও গ্যাসের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এছাড়া শীত শীত আবহাওয়ায় গ্যাসের চাহিদাও বেড়ে যায়। সব মিলিয়ে শুধু  আবাসিক নয়, ঘাটতি পড়েছে শিল্প, বিদ্যুৎ ও সার কারখানায়।

পিডিবি জানায়, বিদ্যুতে গ্যাস সরবরাহ কিছুটা কমেছে। তবে এখনও সরবরাহ সাভাবিক আছে।

তিতাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,  গাজীপুর, সাভার, আশুলিয়া, টঙ্গী, চট্টগ্রামসহ দেশের  বিভিন্ন এলাকার শিল্প কারখানায় গ্যাসের চাপ কমে গেছে। তবে বেশি সমস্যা হচ্ছে ঢাকায় বাসাবাড়িতে।

আজিমপুরের বাসিন্দা তাসনিমা বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরেই সকাল ১০টার পর গ্যাসের চাপ এত কমে যায় যে রান্না করা যায় না। বিকাল ৪টার পর গ্যাস সরবরাহ ঠিক হয়।’

বনশ্রী ই ব্লকের বাসিন্দা মারিয়া হক বলেন, ‘আগে থেকেই সমস্যা ছিল। গত দুই তিন দিন ধরে দিনের বেলা গ্যাসই থাকছেই না।’ 

উত্তরা থেকে আয়শা সুলতানা বলেন, ‘রবিবার সকাল থেকেই গ্যাসের চাপ এত কম যে চায়ের পানিও গরম করতে পারিনি। দুপুরে রান্না করা যাচ্ছে না।  বিকালের দিকে সব রান্না সারতে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘এলএনজির কারণে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে তা খুব বেশি নয়। আমরা সরবরাহ সাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি। আমরা বিদ্যুতে সরবরাহ কমিয়ে অন্যগুলাতে সরবরাহ ঠিক রাখার চেষ্টা করছি। বিদ্যুতে দু’ধরনের জ্বালানি দিয়ে (ডুয়েল ফুয়েল) যেসব কেন্দ্র চলে সেগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছি । তিতাসের মোট ১৯টি বিদ্যুৎ  কেন্দ্রের মধে ১০টি কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে।’

পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,  শনিবার যেখানে ২ হাজার ৯৯৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে সেখানে কাল ২ হাজার ৭১৩ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ করা হয়েছে। ঘাটতি হয়েছে ২৮৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এরমধ্যে বিদ্যুতে ২ হাজার ৫৪ মিলিয়নের চাহিদার বিপরীতে  সরবরাহ করা হয়েছে ১ হাজার ১৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। সার কারখানায়  ৩১৬ মিলিয়নের বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছে ১৮৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। 

 আরও পড়ুন:
চট্টগ্রামে তীব্র গ্যাস সংকট, তিনদিন ধরে বেশিরভাগ এলাকায় জ্বলছে না চুলা