‘এলপিজিতে আগুন লাগে অসচেতনতা-অজ্ঞতা-অসাবধানতায়’

 

জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমঅসচেতনতা, অজ্ঞতা আর অসাবধানতার কারণে বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস-এলপিজিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগ। এ অবস্থায় সিলিন্ডার ব্যবহারে জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে এলপিজি দুর্ঘটনা নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক মো. সামসুল আলম।
সংবাদ সম্মেলনে সচিব আবু হেনা বলেন, ‘দুর্ঘটনার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দুর্ঘটনার স্থানে কোনও সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে না। সাধারণত সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিকেজ হয়ে ঘরে গ্যাস জমা হয়ে পরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।’

সচিব বলেন, ‘অসাবধানতা, অজ্ঞতা আর অসচেতনতার কারণে এলপিজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। তাই সিলিন্ডার ব্যবহারকারীদের সচেতন করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য কিছু নির্দেশনা প্রচার করা হবে। টিভি, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে এবং রাস্তায় নানা ধরনের লিফলেট দিয়ে জনগণকে সচেতন করা হবে। জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নির্দেশনাগুলো সবারই জানা উচিত।’

তিনি বলেন, ‘গাড়িতে সিএনজির চেয়ে এলপিজি বেশি নিরাপদ। ফলে সিএনজির ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।’

জ্বালানি বিভাগ জানায়, কিছু বিষয়ে সচেতন হলে এই দুর্ঘটনা কমবে। আগুনে বা অন্য কোনোভাবে সিলিন্ডার গরম হলে তরল এলপিজি দ্রুত গ্যাসে রূপান্তরিত হয়ে অস্বাভাবিক চাপ বাড়ার ফলে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হতে পারে। এজন্য সিলিন্ডার কোনোভাবেই চুলার বা আগুনের পাশে রাখা যাবে না। এতে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। পাশাপাশি অতিরিক্ত গ্যাস বের করার জন্য এলপিজি সিলিন্ডারে তাপ দেওয়া যাবে না। রান্না শেষে চুলা ও এলপিজি সিলিন্ডারের রেগুলেটরের সুইচ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। গ্যাসের গন্ধ পেলে ম্যাচের কাঠি জ্বালানো যাবে না। ইলেকট্রিক সুইচ এবং মোবাইল ফোন অন বা অফ করা যাবে না। পাশাপাশি ঘরে গ্যাসের গন্ধ পেলে দ্রুত দরজা-জানালা খুলে দিতে হবে এবং এলপিজি সিলিন্ডারের রেগুলেটর বন্ধ করতে হবে। রান্না শুরু করার আধাঘণ্টা আগে রান্না ঘরের দরজা জানালা খুলে দিতে হবে। এলপিজি সিলিন্ডার খাড়াভাবে রাখতে হবে। কখনই উপুড় বা কাত করে রাখা যাবে না। চুলা সিলিন্ডার থেকে নিচুতে রাখা যাবে না। কমপক্ষে ছয় ইঞ্চি উপরে রাখতে হবে। চুলা থেকে যথেষ্ট দূরে বায়ু চলাচল করে এমন স্থানে এলপিজি সিলিন্ডার রাখতে হবে। রান্না ঘরের উপরে ও নিচে ভেন্টিলেটর রাখতে হবে। সিলিন্ডারের ভাল্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেগুলেটর ব্যবহার করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক মো. সামসুল আলম বলেন, ‘সারাদেশে যেখানেই দুর্ঘটনা ঘটে আমরা তদন্ত করে দেখি। কোথাও সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে না। রান্নাঘরে গ্যাস জমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আবার ভাল্ব দিয়ে অতিরিক্ত গ্যাস বের হয়েও দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। আমাদের সবার আগে গ্রাহক সচেতনতার দিকে নজর দিতে হবে।’