প্রতিমাসে এলপিজির দর পরিবর্তন আইনের লঙ্ঘন: ক্যাব

প্রতিমাসে একবার করে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) মূল্য পরিবর্তনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিইআরসি-ঘোষিত আদেশকে আইন বহির্ভুত বলে উল্লেখ করে চিঠি দিয়েছে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। ১৫ এপ্রিল ক্যাবের আইনজীবীর পাঠানো এক চিঠিতে এ কথা বলা হয়েছে।

কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের কাছে পাঠানো চিঠিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ না হওয়ার কথা জানিয়েছে ক্যাব। এতে করে এলপিজির মূল্য হার পরিবর্তনে বিইআরসি যে কমিটি গঠন করছে সেখানে প্রতিনিধি মনোনয়নও দিচ্ছে না ক্যাব।

ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম চিঠি পাঠানোর কথা স্বীকার করে বলেছেন, ‘আমরা মনে করি প্রতি মাসে এলপিজির দাম নির্ধারণের এখতিয়ার কমিশনের নেই। এতে ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ হবে না। আইন অনুযায়ী গুণশুনানি করে সাধারণের মতামতের ভিত্তিতে দাম নির্ধারণ করার কথা। তা না করে কমিশন কমিটি করে দাম নির্ধারণ করতে চায়। যা বিইআরসির আইন অনুযায়ী সঠিক নয়।’

ক্যাব-এর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ন কবীর ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বিইআরসি আইনের ৩৪(৫) ধারা মতে, কোনও জ্বালানির মূল্যহার বছরে প্রয়োজনে একাধিকবার পরিবর্তন করা হতে পারে। কিন্তু প্রতি মাসে অর্থাৎ বছরে ১২ বার নিয়ম করে পরিবর্তন করতে পারে না।

এর আগে বছরে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানির দর একবার মাত্র বাড়াতে পারতো বিইআরসি। তবে জ্বালানির স্বাভাবিক দর বৃদ্ধি পেলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সুযোগ ছিল। যদিও জ্বালানির অস্বাভাবিক দাম বাড়ানোর মতো পরিস্থিতি অতীতে হয়নি। সম্প্রতি সংসদে বিইআরসি আইনের ৩৪(৫) ধারা সংশোধন করে দাম একাধিকবার বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।

গত ১২ এপ্রিল বিইআরসি দেশে এলপিজির দর নির্ধারণ করে। এই আদেশের সঙ্গে সংস্থাটি এও বলে, এখন থেকে প্রতিমাসেই তারা এলপিজির দর নির্ধারণ করে দেবে।

ক্যাব দাবি করেছে মূল্যহার ন্যায্য ও যৌক্তিক হতে হলে এটি নির্ধারণের পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা থাকতে হবে। প্রবিধান মতে গণশুনানি হতে হবে এবং গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

সৌদি আরবের সিপির ভিত্তিতে ভোক্তা পর্যায়ে এলপিজি ও অটোগ্যাসের মূল্যহার সম্পর্কে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে বর্ণিত কমিটিতে ক্যাব-এর একজন উপযুক্ত প্রতিনিধির মনোয়ন অবহিত করার অনুরোধ জানিয়েছে বিইআরসি। কিন্তু ক্যাব প্রতিনিধি দিচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।

এ বিষয়ে কমিশনের কেউ তাৎক্ষণিক মন্তব্য করতে রাজি হননি। ক্যাবের দায়ের করা রিট আবেদনের ভিত্তিতে বিইআরসি এলপিজির মূল্য নির্ধারণ করেছে। এখন বিইআরসি আইনের ব্যাতয় ঘটিয়েছে, ক্যাবের এমন দাবি জোরালো হলে, আইনি সংকটে পড়তে পারে কমিশন।