এলএনজি আমদানিতে তিন বছরে সর্বোচ্চ ভর্তুকি

এলএনজি আমদানিতে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির প্রয়োজন হবে। জ্বালানি বিভাগ থেকে সম্প্রতি এ ভর্তুকি নির্ধারণ করে অর্থ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের পর এটিই হবে সর্বোচ্চ ভর্তুকি।

দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন কমায় সরকারকে এলএনজি আমদানি বাড়াতে হচ্ছে। এখন প্রতিদিন ৯০ কোটি ঘনফুট এলএনজি আমদানি হচ্ছে। গতবছর যা ছিল গড়ে ৬০ কোটি ঘনফুট।

দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে ১৫৯ কোটি ৩০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রায় ৩৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও এলএনজি ও প্রাকৃতিক গ্যাস মিলিয়ে গড়ে ২৭০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হয়েছে। ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে প্রায় ৮০ কোটি ঘনফুট।

এলএনজি আমদানি বৃদ্ধির সঙ্গে ভর্তুকিও বাড়তে থাকবে। শঙ্কার বিষয় হচ্ছে দেশে আমদানির যে অবকাঠামো আছে তাতে সর্বোচ্চ ১০০ কোটি ঘনফুট আমদানি করা সম্ভব। এখনই আমদানি হচ্ছে ৯০ কোটি ঘনফুট। আগামী বছরগুলোতে উৎপাদন আরও কমলে তখন অতিরিক্ত এলএনজি আমদানি করতে গিয়ে বিপাকে পড়বে সরকার। সরকার এলএনজি আমদানির জন্য যে স্থায়ী টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল সেটারও খুব একটা অগ্রগতি নেই।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভবিষ্যতের চাহিদা পূরণের বিষয় মাথায় রেখে কী করে এলএনজি আমদানি বাড়ানো যায় সে বিষয়ে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে শিল্প, বিদ্যুৎ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে ভয়াবহ জ্বালানি সঙ্কট দেখা দেবে।

এদিকে দেশীয় ক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাস উত্তোলনের পাশাপাশি মহেশখালী থেকে দুটি এলএনজি টার্মিনালের সাহায্যে এলএনজিকে গ্যাসে রূপান্তর করে গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। যার একটি যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি এবং অন্যটি সামিট গ্রুপের।

কাতার ও ওমান থেকে এলএনজি আমদানির পাশাপাশি সিঙ্গাপুরের স্পট মার্কেট থেকেও সরকার এলএনজি কিনছে।

গত সপ্তাহে জ্বালানি বিভাগের এক সভায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশীয় গ্যাসের সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়। গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা না থাকলেও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে গ্যাস সরবরাহের চুক্তি করায় পেট্রোবাংলার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় তাতে।

জানতে চাইলে জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকার ঘাটতি মেটাতে নিজস্ব তহবিল থেকে বিনিয়োগ করছে। এর বাইরেও জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল থেকে ভর্তুকির যোগান দেওয়া হচ্ছে।