অবৈধ সংযোগ নিলে বৈধটিও কাটা পড়বে

বৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীর অবৈধ সংযোগ পাওয়া গেলে অবৈধটির সঙ্গে বৈধটিও কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ এবং পাইপলাইন অপসারণ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচনায় আসে।

জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, আবাসিকে গ্যাস সংযোগ বন্ধ হওয়ার পর দেখা গেছে অনেক বৈধ ব্যবহারকারী তাদের বাড়ি সম্প্রসারণ করেছে। সম্প্রসারিত বাড়িতে বৈধ গ্যাস না নিয়ে অনেকে অবৈধ সংযোগ ব্যবহার করে আসছে। গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযানে এতদিন কেবল অবৈধ সংযোগগুলোই বিচ্ছিন্ন করা হতো।

জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, গত ১০ নভেম্বর ওই কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়, এ ধরনের গ্রাহকদের বৈধ সংযোগটিও কেটে দিতে হবে।

জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর আবার সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। আমরা মনে করছি গ্যাস বিতরণ কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশ ছাড়া এ কাজ সম্ভব নয়। এ বিষয়ে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত বছর ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করে জ্বালানি বিভাগ। সেই লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তবে এক বছর পেরিয়ে গেলেও দেখা যাচ্ছে অবৈধ সংযোগ রয়েই গেছে।

চলতি বছর ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের ৫ লাখ এক হাজার ৫৮টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এরমধ্যে তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানির ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৪টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়ে ৯২৬ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস লাইন অপসারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে তিতাসের ছিল ৮৪২ কিলোমিটার। আরও ১০২ কিলোমিটার অবৈধ লাইনের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা অপসারণ করা হয়নি। এরমধ্যে তিতাসের এলাকাতেই আছে ১০১ কিলোমিটার।

তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানির এক কর্মকর্তা জানান, এখনও নারায়ণগঞ্জ এবং সাভারে অনেক অবৈধ গ্যাস পাইপলাইন থাকলেও তা অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে জ্বালানি বিভাগকে জানানো হয়েছে।

বেশি দামে এলএনজি এনে এখন কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে সরকারের বিপুল ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। বেশি দামের এই গ্যাস অবৈধভাবে ব্যবহার বন্ধ করতেই সরকার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বারবার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান চালাই। আবার সেই লাইন রাতারাতি স্থাপন হয়। একই কাজ বারবার করেও ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এবার জিরো টলারেন্স নীতিতে যাবো।