বেঁধে দেওয়া হলো পেট্রোবাংলার দরপত্র থেকে চুক্তির সময়সীমা

পেট্রোবাংলা এবং এর অধীন কোম্পানিগুলোর দরপত্র থেকে চুক্তি পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। দরপত্রের কোনও পর্যায়েই এক থেকে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ব্যয় না করার বাধ্যবাধকতা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, ক্ষেত্র বিশেষে অতিরিক্ত সময় দরকার হলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এক সপ্তাহ বেশি সময় নেওয়া যাবে।

জ্বালানি বিভাগের এক নির্দেশনায় বলা হয়, পেট্রোবাংলা ও এর আওতাধীন কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন, বা বাস্তবায়ন করা হবে— এমন জিওবি ও বৈদেশিক অর্থায়ন, নিজস্ব তহবিল এবং গ্যাস উন্নয়ন তহবিলভুক্ত প্রকল্পগুলো নির্ধারিত মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য দরপত্রের প্রক্রিয়া (পণ্য, কাজ বা সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে) দ্রুততম সময়ে শেষ করার বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

ওই নির্দেশনায় আরও বলা হয়, এই প্রেক্ষাপটে পেট্রোবাংলার ইস্যু করা চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে দরপত্র প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপের যেসব বিষয়ে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬’ এবং ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ (পিপিআর-২০০৮)'-এ সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা আছে, আর যেসব ক্ষেত্রে সময়সীমা পিপিআর-এ সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ নেই— ওই বিষয়গুলোর সময়সীমা যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করা হলো।

নির্ধারিত সময়সীমা এবং সার্বিক নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করে দরপত্র প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপের কার্যক্রম সম্পাদনের বিষয়ে চিঠিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, দরপত্রে সব ধরনের প্রকল্পে ব্যয় নির্ধারণে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ, দর-প্রস্তাব তৈরিতে দুই সপ্তাহ, দরপত্র অনুমোদনের জন্য দুই সপ্তাহ এবং প্রকাশের ক্ষেত্রে এক সপ্তাহ সময় নেওয়া যাবে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে একটা দরপত্র সাত সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর দরপত্র উন্মুক্ত করতে হবে দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে। একইসঙ্গে দরপত্র মূল্যায়নে দুই থেকে চার সপ্তাহের বেশি সময় নেওয়া যাবে না।

মূল্যায়িত প্রতিবেদন অনুমোদনের জন্যও সর্বোচ্চ সময় দুই সপ্তাহ। ঠিকাদারকে  কাজ দেওয়ার জন্য নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (নোওয়া) দিতে হবে এক সপ্তাহের মধ্যে। আর কাজটি করার জন্য ঠিকাদারের সঙ্গে চার সপ্তাহের মধ্যে চুক্তি করতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোনও কোনও ক্ষেত্রে সময় নির্দিষ্ট করে না দেওয়ায় প্রকল্পের দরপত্র চূড়ান্ত করতে বেশি সময় লেগে যায়। এতে প্রকল্প পিছিয়ে যায়। ফলে এক দিকে প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়, আবার অনেক সময় প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যায়। জ্বালানি বিভাগের সূত্র জানায়, সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়ায় এই সংকট থেকে মুক্তি মিলবে বলে আশা করা যাচ্ছে। জ্বালানি বিভাগের যুগ্ম সচিব মোরশেদা ফেরদৌসের সই করা নির্দেশনা সংবলিত চিঠি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জারি করা হয়।

নাম প্রকাশ না করে জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হচ্ছিল। এ কারণে কাজে গতি আনতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।