বয়স বাড়ছিল আমার। আর দেখছিলাম সেই বিচ্ছিন্নতায় আমিও কেমন করে বিলীন হয়ে যাচ্ছি। আর সেই স্লোগান? যা উচ্চারিত হতে দেখেছি তরুণ কণ্ঠে। দেয়ালে দেয়ালে যে স্লোগান পাঠ দিয়ে আমার স্বাক্ষরতার শুরু। সেই দেয়াল রঙিন হয়েছে পুঁজির আশির্বাদে। যে দেয়ালে সমবণ্টনের কথা লেখা হতো, যে দেয়াল শ্রেণি বৈষম্যের প্রতিবাদ করতো, যেই ক্যানভাসে তুলে ধরা হতো একমুখি শিক্ষার প্রতি ষড়যন্ত্রের কথা। সেই দেয়াল ভোগের জয়গান গাইতে শুরু করলো। স্লোগান উচ্চারিত হতো যে কণ্ঠে সেখানে এখন ক্ষমতার ‘জঁপমালা’। ক্ষমতানীতির কাছে যাওয়ার আবেদন সংগীত। তাহলে বাংলাদেশ? কিংবা আমি? বিটুমিনের ঝকঝকে রাস্তায় আমি প্রায়ই আছড়ে পড়ি। উড়াল সেতু পার হতে গিয়ে বুকে কম্পন বাড়ে, সংশয়ে জানতে চাই- বাংলাদেশ তোমার উড়াল টেকসই হচ্ছে তো? সোডিয়াম, এলইডি বাতিও আমার আঁধার কাটাতে পারে না। রাজনীতি নামের দাবা খেলায় যারা ছক কেটে বসে আছেন, তারা কোনও এক ঘোরে নিমজ্জিত।
রাজনীতির ঠিক যে খেলাটি দেখতে চাই। শিখতেও চাই। সেই খেলা যে শুরু করতে হবে। দরকার ছকের চারপাশ ঘিরে বসে আছেন যারা, তাদের জেগে ওঠার। মনের প্রৌঢ়ত্ব কাটাতে হবে।কিন্তু তাদের ঘুম ভাঙবে কোন সঞ্জিবনী সুধা পানে? আমি জানি। বাংলাদেশও জানে। আবারো স্লোগান মুখরিত হতে হবে বাংলাদেশের জমিন। স্লোগানে স্লোগানে লড়াই জমে উঠুক আরেকবার। বাংলাদেশ, তার ষোলোকোটি মানুষের কাছে স্লোগান ফেরী করে বেড়াতে হবে। যে স্লোগানে মানুষের মুক্তির কথা, অসাম্যের কথা, শুভ রাজনীতির কথা থাকবে, যে স্লোগান প্রান্তিক মানুষকে স্বপ্ন দেখাবে বিজয়ে পতাকা ওড়াবার, সেই স্লোগানে ১৬ কোটি মানুষ কণ্ঠ মেলাবেই। এজন্য পুঁজি বা ভোগের বিপণনের প্রয়োজন হবে না।
বাংলাদেশ নিজেই বললো, তুমি আমার প্রথম বিজয়ের মুহূর্ত দেখোনি। আসছে নতুন বিজয়। সেই বিজয় পণ্যের ও ভিনদেশি চিন্তার ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে, ধর্মকে নিয়ে বাণিজ্যের বিরুদ্ধে। সাম্যের সেই বিজয় তোমাকে দেখাবোই। আপাতত স্লোগানে কণ্ঠ মেলাও- হবেই হবে জয়, মানুষের জয়।
লেখক: বার্তা প্রধান, সময় টিভি
আরও খবর: সিঙ্গাপুর ফেরত সন্দেহভাজন ২৩ জনের জঙ্গি সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ