বর্তমানে বাংলাদেশে যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আছে, তারা সুষম নেই একথাতো প্রমাণিতই। অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি অগোছালো। দলটির ভেতরেই ‘ক্যালসিয়াম-হরমন’এর ভারসাম্যহীনতা স্পষ্ট। ফলে নিজেদের ভোটার বা সমর্থকদের কাছেই তারা এখন ভরসার জায়গায় নেই। নিজেদের দলীয় কর্মসূচি নিয়ে তারা বিভ্রান্ত, দলের কে কাণ্ডারি হবে এনিয়েও তাদের সংশয় কাটছে না। অন্যদিকে সংসদে প্রধান বিরোধী দলে আছে যে জাতীয় পার্টি। তাদের ভেতরেও বিভক্তির শেষ নেই। সংসদে এবং বাইরে কোথাও তারা বিরোধী দল হিসেবে নিজেদের অবস্থান রক্ষা করতে পারছে না। তার প্রমাণ হিসেবে আমরাতো সাম্প্রতিক সময়ে দেখতে পেলাম- সফর করে যাওয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং চীনের রাষ্ট্রপতি কেউই জাতীয় পার্টিকে হিসেবে রাখেনি।
দলগতভাবে শক্তিশালী হলে প্রয়োজন তৃণমূলকে গুরুত্ব দেওয়া। আওয়ামী লীগ তৃণমূলের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে স্থানীয় নির্বাচনকে দলীয় পরিচয়ে করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু সেখানে দলের প্রকৃত কর্মী বা নেতাদের বদলে নবাগত ব্যবসায়ী রাজনীতিবীদদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলে অভিযোগ আছে। যদি তাই হয় তবে শক্তিতে ‘খাদ’ রয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগ তার অভিজ্ঞতা দিয়ে সেই ‘খাদ’ উপড়ে দিতে পারবে নিশ্চয়ই। তবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক যে শক্তির কথা বললেন, সেই শক্তিকে সুষম ও টেকসই করতে হলে দলে অর্গানিক রাজনীতিবীদের ভীড় বা লালন বাড়াতে হবে। উচ্চফলনশীলদের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। এই মনস্কতা কেবল আওয়ামী লীগের হলেই হবে না। যারা ক্ষমতাকেন্দ্রীক রাজনীতি করেন, তাদের সকলের এদিকটায় মনোযোগ দিতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ একা শক্তিশালী হলে রাজনীতির ভারসাম্য সুসংহত হবে না। তার শক্তিমত্তার ইতিবাচক ফল পেতে হলে প্রতিপক্ষ বা সহ রাজনৈতিক দলগুলোকেও পুষ্টিকর হতে হবে। এবং অবশ্যই সেখানে অর্গানিক বা সহজাতভাবে উঠে আসা রাজনৈতিক নেতাদের লালনের পরিবেশ থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদকের দিক থেকে আসা সুসংবাদের জন্য দলটিকে অভিনন্দন জানাতেই হয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল নিজেদের সংগঠনকে সুষম করতে তার বক্তব্য থেকে প্রণোদিত হবেন। এমন প্রত্যাশা রাখতে চাই।
লেখক: বার্তা প্রধান, সময় টিভি