ডিজিটাল বাংলাদেশ-এর অন্যতম লক্ষ্য হলো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, তথ্যপ্রযুক্তির সময়োপযোগী ব্যবহারের মাধ্যমে দুর্নীতির মূলোৎপাটন ও দারিদ্র্য দূর করা, তথ্যপ্রযুক্তির সার্বিক বিকাশ ঘটিয়ে ডিজিটাল অর্থনীতির পথে দেশকে এগিয়ে নেওয়া, কানেকটিভিটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সারাদেশের কেন্দ্র থেকে প্রান্ত পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তির সুফল মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া ও প্রযুক্তিমনস্ক নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা।
ডিজিটাল বাংলাদেশের অভিযাত্রায় আমরা বাংলাগভনেট ও ইনফো সরকার-২ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সব জেলা-উপজেলায় উচ্চগতির ফাইবার অপটিক ক্যাবলের আওতায় এনেছি। ইনফো সরকার-৩ ও কানেকটেড বাংলাদেশ প্রকল্পের মাধ্যমে ইউনিয়নগুলোকে সংযুক্ত করতে কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে। শিল্পের বিকাশে জনতা টাওয়ারে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক চালু করতে সক্ষম হয়েছি। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি, যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, সিলেটে ইলেকট্রনিক সিটি, রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু সিলিকন সিটিসহ সারাদেশে মোট ২৮টি আইটি পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের তারুণ্য ও তারুণ্যের কর্মস্পৃহাকে কাজে লাগিয়ে আমরা অফুরান সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচনে কাজ করছি। এই তরুণ গোষ্ঠীকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল থেকে ইন্টারনেট অব থিংস ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
এলআইসিটি প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৪ হাজার তরুণ-তরুণীকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৩ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কর্মকা- চলমান রয়েছে, যা আগামী দিনে আরও বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি।
প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার পর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল ও তৃণমূল পর্যায়ে সরকারি সেবা দ্রুত পৌঁছানোর লক্ষ্যে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আইসিটি ডিভিশন বর্তমানে সব ইউডিসি উদ্যোক্তাদের তৃণমূলের জন্য তথ্য জানালা কর্মসূচির আওতায় প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। পণ্যের উৎপাদন ও যথাযথ বিপণন নিশ্চিত করতে ই-শপ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, ১৮ হাজার ১৩২টি সরকারি অফিসকে ইন্টারনেট কানেকটিভিটির আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে ২৫ হাজার স্মার্ট ডিভাইস দেওয়ার মাধ্যমে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের গতির সঞ্চার, ২৫ হাজার ওয়েবসাইটের সমন্বয়ে সরকারি ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে সরকারি সেবার তথ্য দেওয়ার ফলে জনগণের ই-সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন, তারুণ্যের শক্তি অফুরান। তাই তিনি তরুণ প্রজন্মের অহঙ্কার, আর্কিটেক্ট অব ডিজিটাল বাংলাদেশ, সজীব ওয়াজেদ জয়কে সঙ্গে নিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ নামক যে সুপরিকল্পিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন, তা আজ দৃশ্যমান। আমরা ‘তারুণ্য ভিশন-২০২১’-এর সব লক্ষ্যমাত্রা ধীরে ধীরে পূরণ করে চলেছি।
বাংলাদেশের অন্যতম অনলাইন পত্রিকা ‘বাংলা ট্রিবিউন’-এর তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। একইসঙ্গে অনলাইন পত্রিকাটির উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি
লেখক: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী