ভোট হচ্ছে কিনা, এ নিয়েও বিস্তর সংশয় আছে। গুজবের চাষ এখানে হচ্ছে ভালোই। রাজধানীসহ দশদিকের রকমারি পূর্বাভাস নিয়ে এখানে নির্বাচনকেন্দ্রিক নানা নকশা আঁকা হচ্ছে। কেন এমনটা? কারণ হিসেবে জনপদের মানুষেরা বলছেন–রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে যেমনটা জনমুখী রাজনীতির প্রত্যাশা তারা করেন, তেমন রাজনীতি দেখা যাচ্ছে না বহুদিন। রাজনীতি এখন ব্যক্তি ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক ব্যক্তির সম্পদ আহরণের মাধ্যম হয়ে উঠেছে রাজনীতি। সেই জন্য ভোটাররা এখন আর কদরে নেই। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাবেন কী যাবেন না, তা নিয়ে রাজনীতিবিদদের ভাবনা নেই। কারণ রাজনীতিবিদরা মনে করেন কিছু নগদ ও প্রকাশ্য লেনদেনের মাধ্যমে ভোট চলে আসবে বাক্সোয়। তর্কের মানুষেরা এই ভাবনার কাঠামোতে আঘাত করতে চান।
এক আড্ডা ছাড়িয়ে অন্য আড্ডায় গিয়ে দেখি সেখানেও প্রতিপাদ্য ভোট। ভোটাররা বলছেন, তারা সবাই নানান রাজনৈতিক দল ও মার্কায় বিভক্ত হলেও, প্রত্যেকেই চান বর্তমান রাজনৈতিক ধারার বদল। আসুক যোগ্য প্রার্থী। রাজনীতির জন্য ত্যাগী নেতা আসুক। নিজের ব্যবসা ফুলিয়ে তোলার জন্য রাজনীতিতে নাম লেখানো প্রার্থী তারা চান না। একজন বললেন, এখন তো সালামের অভাব নেই। ভোটে জিতলে বাড়ির দরোজা, অফিসের দরজায় গেলে বলেন, নেতা রেস্টে আছেন। পরের ভোট পর্যন্ত আর বিশ্রাম ফুরোয় না।
তাই এক প্রকার ক্লান্তি এসেছে ভোটারদের মাঝেও। তারা প্রচলিত রাজনীতি, প্রদর্শিত গণতন্ত্র, ভোট এলে নাম না জানা রাজনৈতিক দলের গণতন্ত্র থেকে মুক্তি চান। ১৯৯০’র থেকে রাজনৈতিক অনুশীলন যতটা অগ্রসর, জনমুখী ও উদার হওয়ার কথা ছিল, সেখান থেকে বিপরীত যাত্রা করেছে আমাদের রাজনীতি। ভোট এলেই একই বিষয়ের দরকষাকষি, ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা, মনোনয়ন নিলামে ওঠা, এই মুখস্থ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী? মাঠের মানুষের কাছে যুত্সই ফর্মুলা আছে। রাজধানীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব, চিন্তক শ্রেণি—সেদিকে কান পাতলেই সমাধান পেয়ে যাবেন। কিন্তু আত্মগরিমার দেয়াল ভেঙে তারা এদিকটায় কান পাতবেন, ততটা উদারমনস্কতা কি এবারের ভোটেই দেখাবেন? উত্তর দেবেন কে?
লেখক: বার্তা প্রধান, সময় টিভি