ফেসবুক গোষ্ঠীর মাধ্যমে তারা মানবিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। সাহিত্য, সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীও আছে তাদের। এছাড়া নুসরাত হত্যা, রাজন হত্যা, নিরাপদ সড়ক, নো-ভ্যাট আন্দোলনেও দেখছি এই গোষ্ঠীগুলো সক্রিয় হয়। নিয়মিত না হলেও বছরে এক, দুইবার গোষ্ঠীর সদস্যরা ভার্চুয়াল জগৎ থেকে জমিনে নেমে এসে একত্রিত হয়। এসব গোষ্ঠীর মাধ্যমে আবার এলাকাভিত্তিক সন্ত্রাসী দল এবং মাদক বেচাকেনা চলে। আমি ওদের বলি তোমরা রাজনীতি পছন্দ করো না? রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে তো যুক্ত খুব একটা দেখি না। ওরা জানালো, রাজনীতির প্রতি আগ্রহ খুব একটা নেই ওদের। যাদের আছে তাদের সাইবার গোষ্ঠী আছে। সেখানে তারা চালিয়ে যাচ্ছে সাইবার লড়াই। বলি, এগুলো তো প্রতিহিংসাপরায়ণ। সত্যের চেয়ে মিথ্যের স্তুতি, চিৎকার বেশি। কিন্তু কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন রাজনীতি করছো না। ওদের কথা হলো—সেখানে রাজনীতি নেই। কেউ কোনও রাজনৈতিক আদর্শের জন্য রাজনীতি করে না। তাদের মুখে রাজনৈতিক আদর্শের স্লোগান নাই। তাদের মুখে ব্যক্তি বন্দনা। নিরাপদে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস করতেই তারা রাজনৈতিক দলের লেজ ধরে থাকে। বললাম, শিক্ষার্থীদের ছাত্রসংগঠন করা উচিত। না হলে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে কী করে? পাল্টা প্রশ্ন করলো ওরাই—ছাত্রদের জন্য রাজনীতি করছে কয়টি ছাত্রসংগঠন? ছাত্রদের দাবি নিয়ে স্লোগান কয়টি সংগঠনকে তুলতে দেখছেন? শিক্ষার্থীদের জন্য নিখাদ কোনও সংগঠন নেই। দেখেন না, বড় নেতা আর ছাত্রনেতার চলাফেরা আর সম্পদ প্রায় একই পাল্লায় মাপা যায়। সম্পদের পরিমাণে পরিণত নেতার চেয়ে কোনও কোনও ক্ষেত্রে ছাত্ররাই এগিয়ে। তাদের প্রভাব প্রতিপত্তিও কম নয়। কেউ কেউ বুয়েটের আবরার এবং বর্তমান ডাকসুর উদাহরণও সামনে নিয়ে এলো। তরুণরা তো অভিযোগের সুরেই বললো—নেতা তৈরির কথা বলছেন, কই জাতীয় রাজনীতিতে কয়জন তরুণ নেতাকে সুযোগ দিলেন। ব্যবসায়ী, পেশাজীবী এবং ছাত্রসংগঠন করা নেতাদের আনুপাতিক হিসাব বের করে দেখুন।
বললাম,তাই বলে মাঠ ছেড়ে দেবে? হেরে যাবে তোমাদের দূরে রাখার ষড়যন্ত্রের কাছে? তোমরা হেরে গেলে তো পরাজিত হয় রাষ্ট্র। ওরা বলে, আমরা কখনই ষড়যন্ত্রের কাছে হেরে যাইনি। সময়ের প্রয়োজনে সবার আগে আমরাই সামনে এসে বুক পেতে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু আমরা বরাবরই বিশ্বাসঘাতকতা, প্রতারণা ও বঞ্চনার শিকার হয়েছি। জমিনের সঙ্গে আমাদের শেকড় এতোটাই গভীরে বিস্তৃত যে, আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াই। এবারও দাঁড়াবো। সবুর করুন, আসছি আমরা।
লেখক: বার্তা প্রধান, সময় টিভি