নবান্নের আমেজ আমাদের কাছে যাই হোক না কেন, তার কাছে নতুন ধানের অর্থ হবে ক’টি নতুন দানা।
যে হাওয়া আজ বয়েছে তাতে রাস্তার ধারে অরক্ষিত, ঘুমন্ত অসহায়রা কেঁপে উঠেছে হয়তো, কিন্তু নির্লিপ্ত প্রকৃতি নিস্তার দেয়নি। সেই একই হাওয়ায় চাঙা হয়ে কেউ-কেউ প্রভাতের হাঁটা সেরে নিয়েছেন। তারপর পৃথিবী জেগে উঠেছে, জীবন চলেছে তার নিজ গতিতে। কাজের মাঝে কোলাহল, কোলাহলের মধ্যে কাজ। চলেছে নানা রঙের দিন। অথচ ভাল-মন্দের বিবেচনায়, বিচার-বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সাদা-কালো ছাড়া কোনও রঙ আমাদের চোখে পড়ে না।
পশ্চিমা দেশে সাদা ক্রিসমাস (বড় দিন) এর আশায় থাকে সবাই। বর্ণ বৈষম্যের ক্ষেত্রে ওই সাদা-কালোর প্রকোপ। শোকের প্রকাশ কালো ছাড়া বেমানান, আর শুভ্রতার সঙ্গে সাদা যেন অবিচ্ছেদ্য। আত্মতৃপ্তি এত সহজ! অথচ শ্বেতাঙ্গ এবং কৃষ্ণাঙ্গ নারীরা শারীরিক রঙ বদলাবার জন্য কত ব্যয় করেন। কেউ কেউ তামাটে করার জন্য, অন্যরা ফর্সা হওয়ার জন্য ক্রিম-লোশানের পেছনে অর্থ ব্যয় করেন। অন্তর্দ্বন্দ্ব কবে যে শেষ হবে বোঝা দায়।
পরিভাষা যাই হোক না কেন, সাদা-কালোর অশুভ বৃত্তের বাইরে রঙ খুঁজে নিয়ে নতুন যাত্রার উপযুক্ত সময় এখনও, আজই।
একটা সময় ছিল যখন ব্রিটেনের রানী তার বড়দিনের ভাষণে 'White Christmas'-এর কথা বলতেন। আজকাল তিনি বড়দিনের গুরুত্ব তুলে ধরেন বরাবরের মতো কিন্তু শুভেচ্ছার বেলায় 'Those who are celebrating Christmas' বলতে ভুল করেন না। একইভাবে, বিবিসি এবং সিএনএনকে এভাবেই শুভেচ্ছা জানাতে দেখা গেছে। ধর্মনিরপেক্ষতার এই সূক্ষ্ম পরিবর্তন প্রশংসার দাবি রাখে। বছরটি হোক সহনশীলতার, সংঘাতমুক্ত, পরস্পরের মতামতে আলোকিত।
শুভ নববর্ষ।
লেখক: কমিউনিকেশন বিশেষজ্ঞ
*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। বাংলা ট্রিবিউন-এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য বাংলা ট্রিবিউন কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।