স্থানীয় ভোটাররা তাদের প্রার্থী এবং প্রতিনিধি হিসেবে কাকে চান? দল ও জনগণের জন্যে যারা কাজ করেন। রাজনীতির সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে যারা নেতা হয়েছেন, জনগণ তাদের প্রতি আস্থা রাখতে চান। ভোটাররা জানেন, চেনেন কারা ক্ষমতার রঙ বদলের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের বদলে ফেলে। আয়ের উৎসগুলোও জানা। তাই প্রকৃত রাজনৈতিক নেতা কে, কাকে আপদে-বিপদে কাছে পাওয়া যাবে, এটা ভোটাররা ভালো করেই জানেন। ভোটারদের বরাবরই অপছন্দ উড়ে এসে ডালে বসা প্রার্থীদের। এনিয়ে তাদের অভিমানের বহিঃপ্রকাশও আমরা দেখতে পাই। ক্ষমতায় যাওয়ার অভ্যাস আছে, এমন রাজনৈতিক দল প্রায়শই এই ভুলটি করে থাকে। কখনও কখনও এজন্য তাদের মাশুলও গুণতে হয়েছে। এবার নির্বাচনমুখী হওয়ার ঘোষণা দিয়েই আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বর্ণচোরাদের চিহ্নিত করা হবে। তাদের বের করা হবে এবং শাস্তি দেওয়া হবে। এই কাজটি সত্যিই ক্ষমতাসীন দলের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে ধুলো ময়লা জমে গেছে অনেক। এখন ঝেড়ে ফেলা প্রয়োজন। না হলে আগামী নির্বাচনে ধুলি ঝড় তুলে ত্যাগী ও প্রকৃত রাজনীতিবীদদের আবারও তারা বঞ্চিত করবে।
আওয়ামী লীগ বলছে আগামী নির্বাচন মোকাবিলা করবে তরুণরা। এটা শুভ লক্ষণ। তরুণদের সামনের সারিতে নিয়ে আসলে শুধু দল নয়, রাষ্ট্র গতিশীল হবে। তবে পুরনো মেধাবীদের চিন্তারও সম্মানজনক অবস্থানের প্রয়োজন রয়েছে। প্রবীণ ও তরুণের মিথস্ক্রিয়া রাষ্ট্রকে শুভ চিন্তার গন্তব্যে পৌঁছবে।
বিএনপি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে। ক্ষমতায় না থাকলে দুঃসময়ের নেতা কর্মী চিনে নেওয়া সহজ। যদিও অতীত অভিজ্ঞতা বলে, ক্ষমতায় গেলে এই দুঃসময়ের সঙ্গীদের আর মনে রাখে না দলগুলো। বিএনপি ইতিহাসের একই পথে হাঁটবে কিনা, সেটি বলে দেবে আগামী দিন। তবে বিএনপি আপাতত আন্দোলনের পথ খুঁজছে। নির্বাচন কমিশনে পরিবর্তনসহ নানা শর্তের বায়না সাজাচ্ছে। এগুলো বিরোধী দলের উপসর্গ। তারা এটা করবেই। তবে বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকা, এবং ক্ষমতা চক্রে ফিরতে হলে নির্বাচনমুখী হতেই হবে।
আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয়দলের কাছেই সাধারণ ভোটারদের চাওয়া- উচ্চফলনশীল নয়, প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা নেতাদেরই ভোট মঞ্চে তুলে আনা হোক। এতে রাজনীতি যতটা দূষিত হয়েছে, তার সহজ পরিশোধন সহজ হবে।
লেখক: গণমাধ্যম কর্মী