শাহজাদপুরে ১৩ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত

সিরাজগঞ্জসিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কৈজুরী গ্রামে নারী ও শিশুসহ ১৩ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে গত ৩ মাসে জেলার শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া ও কামারখন্দ উপজেলায় মোট ৯১ জন ব্যাক্তি এ রোগে আক্রান্ত হলেন।

সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. শেখ মো. মঞ্জুর রহমান জানান, শাহজাদপুর উপজেলার চর কৈজুরী গ্রামে খামার মালিক নজরুলের একটি অসুস্থ ষাঁড় জবাই, গোসত কাটা-ছেড়া এবং নাড়াচাড়ার কাজে নিয়োজিত ১৩ ব্যক্তি অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিষয়টি জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের নজরে আসলে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সময় সাধারণত এ অঞ্চলে প্রায় প্রতি বছরই এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায় বলেও জানান মো. মঞ্জুর রহমান।

অ্যানথ্রাক্স আক্রান্তরা হলেন- হাসি (৩), তামিম (৪), ইয়াছিন (৬), আঁখি (৭), নুপুর (৮), স্বপ্না (১০), আলামিন (১৩), তুর্য খাতুন (২৫), হাসনা খাতুন (৩৫), পলাশ (২৫), শামীম (৩৫), মরিয়ম বেগম (৬৪) ও জামিলা বেওয়া (৬৩)।

শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাফরুল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ৮ জন রোগীকে শাহজাদপুরে এবং শুক্রবার সকালে বাকি ৫ জনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, গত মে মাসে উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের চর কৈজুরী, পোরজনা ইউনিয়নের জামিরতা ও কায়েমপুর ইউনিয়নের সড়াতৈল গ্রামে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ পর্যাক্রমে ১৮ জন অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হন। এছাড়াও ওই সময় জেলার কামারখন্দ ও উল্লাপাড়া উপজেলাতেও অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।

শাহজাদপুর উপজেলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সামাদ জানান, মূলত বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় এলাকার গবাদি পশুর শরীরে বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। সময়মতো টিকা দেওয়া হলেও বন্যায় প্লাবিত কচুরিপানা ও ঘাস খেয়ে গবাদি পশুর শরীরে অ্যানথ্রাক্স বা তড়কা রোগ দেখা দিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, অসুস্থ গরুর গোসত বিক্রির অপরাধে মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামীম আহমেদ শনিবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ইতোমধ্যে আমরা অ্যানর্থাক্স বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং এর মাধ্যমে জনসংযোগ করেছি। মসজিদের ইমাম, স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লোকজনকে নিয়ে দুয়েকদিনের মধ্যেই বিশেষ একটি সভা আমরা করতে যাচ্ছি। রবীন্দ্র কাচারীবাড়িতে এই বৈঠক হতে পারে। অ্যানথ্রাক্স নিয়ে যাতে আতঙ্ক না ছড়ায় সেজন্যই এসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, প্রায় প্রতিবছরই এ অঞ্চলে এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।

যে গরুর মাংস কাটার সময় অ্যানথ্রাক্স আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে তার মালিককে ধরার জন্য অভিযান চলছে। তাকে গ্রেফতার করার পর মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হবে বলেও জানান শামীম আহমেদ।   

আরও পড়ুন- 

পদত্যাগে বাধ্য হয়েছি, চাকরিতে ফিরতে চাই: এসপি বাবুল
দুই আবেদনপত্রে যা লিখেছেন বাবুল আক্তার

লাউয়াছড়ায় ২৫ হাজার গাছ না কাটার সিদ্ধান্ত

/এসএনএইচ/এফএস/