দিনাজপুরে একমাসে চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৮ টাকা

দিনাজপুরধান ও চাল উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরে বাড়ছে চালের দাম। গত এক মাসের ব্যবধানে প্রকারভেদে চালের দাম বেড়েছে ৭ থেকে ৮ পর্যন্ত। সুগন্ধি বা চিকন চালের দাম ঠিক থাকলেও মোটা চালের বাজার ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস উঠেছে খেটে খাওয়া মানুষের।

বাজারের চেয়ে সরকারের বেশি মূল্য চাল সংগ্রহের ফলে চালের দাম বাড়ছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি মূল্যস্ফীতির তুলনায় চালের দাম কমেই বেড়েছে।

এক মাস আগে দিনাজপুরের প্রধান খুচরা ও পাইকারী চালের আড়ত বাহাদুর বাজারে গুটি স্বর্ণ (মোটা) চাল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২৬/২৮ টাকায়, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৩/৩৪ টাকায়। বিআর আঠাশ ৩২/৩৩ টাকার স্থলে ৩৮/৪০ টাকায়, স্বর্ণ ৩০/৩১ টাকার স্থলে ৩৭/৩৮ টাকায়, মিনিকেট ৩৮/৪০ টাকার স্থলে ৪৫/৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহেও বিআর আঠাশ জাতের চাল ৩৫/৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন কেজিতে বেড়েছে ৩/৪ টাকা বেশি। এছাড়া এ সময়ে মোটা চাল (গুটি স্বর্ণ) কেজিতে ৩/৪ টাকা, মিনিকেট ৩/৪ টাকা ও স্বর্ণ ৪/৫ টাকা বেড়েছে।

এদিকে চালের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষ। বাহাদুরবাজারে চাল কিনতে আসা মোসলেমা বেগম জানান, ‘৮/১০ দিন আগেও চাল কিনেছেন ২৭ টাকা কেজি দরে। কিন্তু এক সপ্তাহের ব্যবধানে একই চাল কিনতে হচ্ছে ৩৩ টাকায়। এভাবে চালের দাম বাড়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’

চাল ক্রেতা হামিদুল আলম জানান, ‘এক মাস আগে এক হাজার ৯৫০ টাকা বস্তা (৫০ কেজি) দরে মিনিকেট চাল কেনেন। যা এখন চাওয়া হচ্ছে ২ হাজার ২৫০ টাকা। অনেকটা বাধ্য হয়েই বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে।’

খুচরা ব্যাবসায়ীদের দাবি, সরকার ৩২ টাকা কেজি দলে চাল সংগ্রহ শুরু করায় ঈদের পর থেকেই চালের দাম বাড়ছে। খুচরা বিক্রেতা শফিকুর রহমান জানান, ‘মিলারদের কাছ থেকে সরকার বেশি দামে চাল কেনায় তাদেরকেও দাম বাড়িয়ে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে।’

তবে খুচরা ক্রেতাদের অভিযোগ, মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে চাল মজুদ করছে, ফলে দাম বাড়াচ্ছে।

মিল মালিক সফিক চৌধুরী বলেন, ‘মিলের স্বার্থেই তাদেরকে গোডাউনে বেশি পরিমাণ মজুদ রাখতে হয়। একটি অটো মিলে প্রতিদিন ৩ হাজার বস্তা ধানের প্রয়োজন হয়। অথচ প্রতিদিন ৩ হাজার বস্তা ধান সংগ্রহ করা সম্ভব না। তাই প্রয়োজনের অনেক বেশি মজুদ রাখতে হয়।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কার্যকরী সদস্য সহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন বলেন, ‘মিলাররা মজুদ করছে কিংবা সিন্ডিকেট করছে এটি ঠিক নয়। যে হারে দেশে মূল্যস্ফীতি সেই তুলনায় এখনও ধান-চালের দাম বাড়েনি। চালের দাম আরও বাড়া উচিত। দাম বাড়লে কৃষক লাভবান হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এমনিতেই এই সময়ে চালের দাম একটু বেশিই থাকে। আর কিছুদিন পরে আমন ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হলে চালের দাম কমে যাবে।’

/এসএনএইচ/