তথ্যমতে, নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বাঁশিলা গ্রামের দক্ষিণপাড়া ও উত্তরপাড়ায় দুটি কবরস্থান রয়েছে। এছাড়া রয়েছে বাঁশিলা কেন্দ্রীয় গোরস্থান। দক্ষিণপাড়া গ্রামের সুলতান মণ্ডল মারা যাওয়ার পর তাকে কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়।
সুলতান মণ্ডলের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম (৭৫) বুধবার মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তার সন্তানদের কাছে শেষ ইচ্ছার কথা জানান, মৃত্যুর পর তাকে যেন স্বামীর কবরের পাশে দাফন করা হয়।
আঞ্জুয়ারা বেগমের ছেলে রেজাউল করিম দাবি করেন, তিনি তার মায়ের ইচ্ছা পূরণে বাঁশিলা কেন্দ্রীয় গোরস্থানের সভাপতি আব্দুল আজিজ ও সহসভাপতি জয়নাল খাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর নিয়মানুযায়ী গোরস্থান কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন এবং আব্দুস সোবহানের কাছে এক হাজার টাকা জমা দিয়ে কবরের জায়গার অনুমতি নেন।
কবর খনন শেষে বুধবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে লাশ নিয়ে তারা নিজ বাড়ি থেকে গোরস্থানের দিকে রওনা হন। কিন্তু পথে ফৌজদার পাড়া এলাকায় পৌঁছলে উপজেলার মাধনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহের উদ্দিন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক ইউপি সদস্য দিলশাত শেখ, আওয়ামী লীগ নেতা নহির উদ্দিন ও এরশাদ আলী তার মায়ের লাশ নিয়ে যেতে বাধা দেন। এসময় উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে তারা বাঁশিলা উত্তরপাড়া কবরস্থানে ফিরে যান এবং সেখানে আঞ্জুয়ারা বেগমের লাশ দাফন করেন।
আঞ্জুয়ারা বেগমের ছেলে রেজাউল করিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রস্তুতি সম্পন্ন করা সত্ত্বেও তারা তাদের মায়ের শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে না পেরে মর্মাহত।
তিনি দাবি করেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুমতি না নেওয়ার কারণে তার মায়ের লাশ দাফন করতে দেওয়া হয়নি।
বিষয়টি সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে ৯নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহের উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান,এখানকার নিয়ম হচ্ছে, যে এলাকার লোক সেই এলাকার কবরস্থানেই দাফন করা হবে। নিয়ম পরিবর্তনের কারণ জানতে চেয়েছেন তারা। লাশ দাফনে কোনও বাধা দেয়া হয়নি।
বিষয়টি সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে কেন্দ্রীয় গোরস্থান কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ খান জানান, ‘আঞ্জুয়ারার লাশ কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফনে কমিটির নিয়মে কোনও বাধা নেই ।’
এ সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে মাধনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন দেওয়ান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তিনি ঢাকায় রয়েছেন। ঢাকা থেকে ফিরে এসে বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন।
তিনি জানান, দল-মত নির্বিশেষে কোনও মানুষই লাশ দাফনে বাধা দিতে পারে না। তিনি এঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
এপিএইচ/
আরও পড়ুন: