বিচার দেখে যেতে পারলে শান্তি পাবো: তনুর বাবা

তনু হত্যাকাণ্ডকুমিল্লায় ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের এক বছর পূর্তিতে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করেছে তনুর পরিবার। সোমবার দুপুরে তনুর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে গ্রামের মাদ্রাসার ৪০ জনকে এতিমকে খাওয়ানো হয়। মিলাদ উপলক্ষে বাড়িতে গেছেন তনুর মা-বাবা, দুই ভাই নাজমুল হোসেন ও আনোয়ার হোসেন রুবেল। এসব আয়োজন নিয়ে মোবাইল ফোনে বাংলা ট্রিবিউনকে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, বাবা-মা মারা গেলে ছেলে-মেয়েরা মৃত্যুবার্ষিকী পালন করবে; এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদেরকে মেয়ের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে হচ্ছে, এটা আমাদের জন্য খুবই কষ্টের। মেয়ের মৃত্যুর পর বাবাকেও হারালাম। নানা চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। মেয়ে হত্যার বিচার দেখে যেতে পারলে মনে শান্তি পাবো। 
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন,সিআইডি আমাদের বলে চুপ থাকেন। চুপ থাকলেও সমস্যা,না থাকলেও সমস্যা। চুপ থাকলে বলবে আমরা কিছু বলছি না। কথা বললে বলবে এতো কথা বলার দরকার কি? তনুর হত্যার বিচার চেয়ে পুলিশ,ডিবির পর সিআইডি’র দ্বারে দ্বারে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, জানি না বিচার পাব কিনা। মেয়ের মৃত্যুর পর আমার পরিবারটা ধ্বংস হয়ে গেছে। তনুর বাবা অসুস্থ,আমারও শরীর ভালো যাচ্ছে না। চারদিকে যে চাপ- কোন দিন তনুর বাবার চাকরিটাও চলে যায়।

উল্লেখ্য, কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি জঙ্গল থেকে গতবছরের ২০ মার্চ রাতে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবি’র পর গতবছরের ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি-কুমিল্লা।

দেশজুড়ে ক্ষোভের জন্ম দেওয়া এ হত্যাকাণ্ডের পরপরই ঘাতকদের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন মহলসহ দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠে। তবে ধীরে ধীরে সবই থেমে গেছে। তনুর লাশের দুই দফা ময়নাতদন্ত, মামলার তদন্তকারী সংস্থা,কর্মকর্তা পরিবর্তন হলেও এ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি তনু হত্যা মামলা।

/এমপি/