পাহাড়ে আমের ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

পাহাড়ে আমবান্দববানের পাহাড়ি এলাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর আমের ফলন কম। তারপরও চলতি মৌসুমে গত বছরের তুলনায় বেশি দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে ।

জেলা সদরের লাইমি পাড়া, ফারুক পাড়া, বেতেল পাড়া, স্যারন পাড়া, গ্যৎসমনি পাড়ার শত শত একর আম বাগান প্রথমে ফুলে ফুলে ভরে গেলেও বাতাস আর বৃষ্টিতে প্রথমদিকে অধিকাংশ আমের মুকুল ঝরে যায়। কিন্তু বাজারে আমের দাম বেশি হওয়ায় অল্প ফলনেও লাভের মুখ দেখছেন পাহাড়ের কৃষকেরা।

ফারুক পাড়ার কৃষক জাতলং বম বলেন, ‘এ বছর গাছে গুটি কম আসায় প্রথমে আশানুরুপ ফল বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। তবে বাজারে আমের দাম বেশি হওয়ায় আমার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। গত বছর প্রতি কেজি আম ১৫/২০ টাকায় বিক্রি করেছি। এবছর ২০/৩০ টাকায় বিক্রি করছি।’

পাহাড়ে আম-১স্যারেন পাড়ার কৃষক জিলিয়ান বম বলেন, ‘পাঁচ একর জমিতে রাংগোয়াই ও আম্রপালিসহ কয়েক প্রজাতির ৬শ’ আম গাছ আছে। এভাবে দাম পেলে পরবর্তীতে আরও লাভ হবে।’

ফারুক পাড়ার নারী কৃষক নুনজির বম বলেন, ‘গত বছর আম বিক্রি করে মাত্র ২ লাখ টাকা লাভ করেছি। কিন্তু এ বছর পাহাড়ে কম ফলন হলেও ৪ লাখ টাকার বেশি লাভ হয়েছে।’

আমের বাগান কিনতে আসা মো. রফিক বলেন, ‘আমের বাগান কিনতে এসেছি। এবছর আম কম। তারপরও রোজার মাসে সমতলে এখানকার আমের চাহিদা বাড়ায়  ও পোঁকার উপদ্রব কম হওয়ায় ভালো দাম দিতে পারছি।’

পাহাড়ে আ২কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানাগেছে, ২০১২-১৩ সালে ৪ হাজার ৩১২ হেক্টর জমিতে ৬০ হাজার ৩৬৮ মেট্রিক টন, ২০১৩-১৪ সালে ৪ হাজার ৪১৫ হেক্টর জমিতে ৬০ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন, ২০১৪-১৫ সালে ৪ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে ৭৬ হাজার ৮৬ মেট্রিক টন, ২০১৫-১৬ সালে ৪ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে ৮১ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিল। চলতি ২০১৬-১৭ সালে ৬ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে ৮১ হাজার ৮৪০ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছে।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, স্থানীয়ভাবে বান্দরবান জেলায় চার ধরণের রাংগোয়াই আমের জাত রয়েছে। এর মধ্যে একটি আগাম জাত হিসেবে পরিচিত, আরেকটি শাঁস আঁশযুক্ত। অন্য দুটির একটির শাঁস লালচে-হলুদ এবং আরেকটি নাবি জাত। যেটি সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত বাজারে পাওয়া যায়। পোঁকা কম এবং খেতে বেশ সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে রাংগোয়াই আমগুলোর চাহিদাও রয়েছে প্রচুর।

বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘গত বছর আমের ফলন বেশি হলেও বাজারে চাহিদা কম থাকায় কৃষকদের বাগানেই কম দামে আম বিক্রি করতে হয়। রমজানের কারণে আগের বছরের চেয়ে এবার আমের চাহিদাও বেশি রয়েছে। ফলে কৃষকরা ফলনে খুশি না হলেও দামে খুশি।

/এসএনএইচ/