এবার ঈদে জমে ওঠেনি বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্র

এবারের ঈদে বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রগুলো জমে ওঠেনিবান্দরবানে মেঘলা, নীলাচল, প্রান্তিক লেক, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, নীলগিরি ও স্বর্ণমন্দিরসহ রয়েছে অসংখ্য পর্যটন স্পট। প্রত্যেকটা স্পটেরই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য। আর এ সৌন্দর্যের টানে আকৃষ্ট হয়ে প্রতি বছরই ঈদের সময় পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয় পাহাড়ি কন্যা বান্দরবানের এ পর্যটন স্পটগুলো। কিন্তু এ বছর ঈদে পর্যটকের উপস্থিতি অনেকাংশে কম। ফলে জমে ওঠেনি বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রগুলো।

পর্যটন কেন্দ্র ও হোটেল মোটেল পরিদর্শনে দেখা গেছে, মেঘলা, নীলাচল, প্রান্তিক লেকসহ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে প্রতি বছরের তুলনায় পর্যটকের সংখ্যা অনেক কম। অনেকগুলো পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক নেই বললেই চলে। এদিকে শহরের হিলভিউ, গ্রিন হিল, হিলটন, ফোরস্টার, পালকি, গ্রিনল্যান্ডসহ বিভিন্ন হোটেল মোটেলগুলোতে বুকিং হয়েছে অনেক কম। এর মধ্যে ঈদের আগের দিনও অনেকগুলো বুকিং বাতিল হয়ে গেছে। সম্প্রতি ভারী বর্ষণে পাহাড় ধস ও বৈরি আবহাওয়াকেই এ জন্য দায়ী করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

Bandarban Porjoton pic (5)বান্দরবান নীলাচল কাউন্টার ম্যানেজার মো.আমজাদ হোসেন বলেন, প্রতি বছর ঈদের দিন চার থেকে পাঁচ হাজার টিকিট বিক্রি হয়। কিন্তু এবার ঈদে এ পর্যন্ত মাত্র ৯৩৪টি টিকিট বিক্রি করতে পেরেছি। বৈরি আবহাওয়ার কারণে হয়তো পর্যটক আগের বছরের চেয়ে কিছুটা কম এসেছে।

বান্দরবান পর্যটন হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম বলেন, বান্দরবান বাংলাদেশের একটি অন্যতম পর্যটন এলাকা। ঈদের ছুটিতে এখানে প্রতিবছর প্রচুর সংখ্যক পর্যটক আসে। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং ভূমি ধসের কারণে পর্যটকদের মনে এক ধরণের আতঙ্ক থাকায় পর্যটক কিছুটা কম।

তিনি বলেন, আতঙ্ক কেটে গেলে পর্যটক আবারও আগের অবস্থায় ফিরে আসবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ভূমি ধসের কারণে এখানকার রাস্তাঘাট এবং পর্যটন স্পটের কোনও ক্ষতি হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Bandarban Porjoton pic (4)এ দিকে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা সাব্যসাচী বলেন, আমি বান্দরবানে আসার আগে অনেকটাই আতঙ্কে ছিলাম। ঠিকমত বেড়াতে পারব কিনা? কিন্তু এখানে এসে দেখি কোনও সমস্যাই নেই।

ঢাকা থেকে আসা  আরেক নারী পর্যটক অন্তরা বলেন, আমি ঈদে পরিবার নিয়ে বান্দরবান আসলাম। বান্দরবানের নীলাচল, মেঘলা, চিম্বুক ও নীলগিরি গিয়েছি। স্বর্ণ মন্দিরও যাব। আমি ভাবতেই পারিনি বান্দরবানে এত ভালভাবে ঘুরে বেড়াতে পারব। সত্যিই আমি এবং আমার পরিবার এখানকার মনোরম পরিবেশে মুগ্ধ।

বেড়াতে আসা পর্যটক শাহিন বলেন, এখানে আসার আগে ভেতরে কিছুটা আতঙ্ক কাজ করছিল ভূমিধস, বন্যা এতে কি পরিস্থিতি হবে? কিন্তু আসার পর দেখলাম এত সুন্দর একটা পরিবেশ।

কুমিল্লা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে আসা উর্মি বলেন, মা-বাবাকে ফেলে অনেক কষ্ট করে এই প্রথম এখানে ঈদ করছি। তারপরও অসম্ভব ভাল লাগছে। আমরা ইতিমধ্যে মেঘলা, নীলাচলসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি।

Bandarban Porjoton pic (3)ব্রাক্ষণবাড়িয়ার পর্যটক মহিউদ্দিন আরমান জানান, এখানকার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলো আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ঘুরে দেখেছি। অনেক ভাল লাগছে। তবে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটক অনেক কম ছিল বলেও তিনি জানান।

এদিকে, পর্যটন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা বান্দরবান নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) হোসাইন মো. আল মুজাহিদ বলেন, মেঘলা, নীলাচল, প্রান্তিক লেক, চিম্বুক পাহাড়সহ সব পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে আমরা সাজিয়েছি। এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও চমৎকার। পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে সবাই নিশ্চিন্তে এবং নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াতে পারবে।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, প্রবল বর্ষণে যে পাহাড় ধস হয়েছে তার ছোঁয়া পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে লাগেনি। ঈদ পরবর্তী পর্যটক যারা আসছে এবং যারা আসবে তারা যেন নিরাপদে নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারে সে লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে আমরা নির্দেশ দিয়েছি।

/বিএল/