মেয়ের বাল্যবিয়ের আয়োজন করলেন ইউপি সদস্য!





কুড়িগ্রামকুড়িগ্রামে এক ইউপি সদস্য তার মেয়ের বাল্যবিয়ের আয়োজন করলেও মেয়ে কামরুন্নাহার শাপলা (১৬) তাতে অমত দিয়েছেন। বাল্যবিয়ে থেকে বাঁচতে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ‌ মো. অাজহারুল ইসলামের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন তিনি। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নে তার বাড়ি।

কামরুন্নাহার শাপলা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উপজেলার ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের মধু সিনেমা হলের পাশের এলাকার বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে সোহেল রানার সঙ্গে তার বিয়ের কথা পাকা হয়। কিন্তু তিনি এই বিয়েতে রাজি নন। জন্ম তারিখ (০৯/১২/ ২০০১) অনুযায়ী তার বর্তমান বয়স ১৬ বছর। তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সাময়িকভাবে বিয়ের কার্যক্রম স্থগিত করে পরিবার। কিন্তু পরবর্তীতে তাকে উপজেলার বাউশমারী এলাকায় তার নানার বাড়িতে নিয়ে রাখা হয়। বর্তমানে সেখানে তার বিয়ের প্রস্তুতি চলছে।’ 

কামরুন্নাহার শাপলা আরও বলেন, ‘এ বছর দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে স্থানীয় তিলাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভূরুঙ্গামারী ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন। তিনি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চান। অন্তত উচ্চ মাধ্যমিক পাসের আগে বিয়ে করতে আগ্রহী নন তিনি। এজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কামরুন্নাহার শাপলা।’

শাপলার বাবা ও তিলাই ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য কামরুজ্জামান মেয়ের বাল্য বিয়ের প্রস্তুতির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘নিজের ভুল বুঝতে পেরে বিয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কথা দিয়েছি, ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেব না। আর ছেলে পক্ষকেও আমার বর্তামান সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি।’

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান বলেন, ‘আমি খবর পাওয়া মাত্র উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে যে কোনও মূল্যে এই বিয়ে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। ইতোমধ্যে মেয়ে ও ছেলে উভয় পক্ষের অভিভাবকদের ডেকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।’ জেলা প্রশাসক আরও বলেন, কোনোভাবেই এই বিয়ে হতে দেওয়া হবে না।

/এনআই/