নতুন বাড়িতে ওঠা হলো না ল্যান্স নায়েক সুমনের

এই বাড়িতেই ওঠার কথা ছিল ল্যান্স নায়ক সুমনের (ছবি- হবিগঞ্জ প্রতিনিধি)

বাড়ির পাশে বাবার দেওয়া জমিতে নতুন বাড়ি তৈরি করেছিলেন বিজিবির ল্যান্স নায়েক সুমন। কিছুদিন পর ওই বাড়িতে ওঠার কথা ছিল তার। কিন্তু সেই বাড়িতে আর ওঠতে পারলেন না তিনি।

বুধবার (২৮ জুন) দুপুরে সুমনের হবিগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে গেলে তার আত্মীয়-স্বজনরা এসব কথা জানান। এর আগে সকাল সোয়া ১০টার দিকে লালমনিরহাটের দহগ্রামের আবুলের চর থেকে প্রায় চার কিলোমিটার পূর্ব ভাটিতে ভারতীয় অংশে তিস্তা নদী থেকে কোচবিহার-১৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের উদ্ধারকারী দল সুমনের লাশ উদ্ধার করে। এ খবর পেয়ে সুমনের গ্রামের বাড়িতে যান এ প্রতিনিধি।

সুমনের বড় ভাই আশিক মিয়া বলেন, ‘একটি নতুন বাড়ি তৈরি করেছিল আমার ভাই। কিছুদিন পর তার ওই বাড়িতে উঠার কথাও ছিল। কিন্তু সেই আশা আর পূরণ হলো না তার।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুমনের লাশ উদ্ধারের খবরে পুরো পরিবার স্তব্দ হয়ে গেছে। অন্য কাউকে সান্ত্বনা দেব কি, নিজেই মনে কোনও সান্ত্বনা খুঁজে পাচ্ছি না।’

সুমনের শ্বশুর আবুল ফজল বলেন, ‘সুমনের লাশ উদ্ধারের খবর শোনার পর থেকে আমার মেয়ে জেসমিন আক্তার বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে। শোকে অনেকটা পাথর হয়ে গেছে সে। আগামী কয়েক মাস পর আমার মেয়েকে নিয়ে নতুন বাড়িতে উঠার কথা ছিল সুমনের।’

সুমনের চাচাতো ভাই কবির মিয়া বলেন, ‘আমার চাচা আব্দুল হেকিম (সুমনের বাবা) প্রায় ৩ মাস পূর্বে মারা গেছেন। এর আগে তিনি সুমনকে বাড়ির পাশের এক খণ্ড জমি দিয়ে যান, সেখানে সুমন নতুন একটি বাড়ি তৈরি করেছিল। নিয়তির কি পরিহাস! সে বাড়িতে আর ওঠতে পারল না সুমন।’

সুমন মিয়া (ছবি- প্রতিনিধি)

প্রসঙ্গত, ঈদের দিন সোমবার (২৬ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে লালমনিরহাটের দহগ্রাম সীমান্তে তিস্তা নদীতে ভারতীয় গরু পাচার প্রতিরোধ করতে গিয়ে নিখোঁজ হন সুমন।  পরে বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

/এমএ/