মৌলভীবাজারে প্লাবিত এলাকায় গো-খাদ্য সংকট

মৌলভীবাজারে বন্যামৌলভীবাজারে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষজন নিজেদের খাবার জোগাড়ের পাশাপাশি এখন গো-খাদ্যের সংকটে পড়েছেন। জেলার কিছু কিছু এলাকায় গবাদি পশুর খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে, জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত রয়েছে। প্লাবিত এলাকার পানিও নামছে ধীরগতিতে। জেলার ৫টি উপজেলার  ৩৫০টি গ্রামের তিন লাখ ১০ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছিলেন।

বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও জেলায় এখনও প্রায় ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন। জেলার বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, রাজনগর ও সদর উপজেলার হাওরসংলগ্ন বন্যাকবলিত এলাকায় মানুষের খাবার ও পানীয় জলেরও ঘাটতি রয়েছে। শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর পানি দু’দিন ধরে চার সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রবিজয় শংকর চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘হাকালুকি হাওর ও কাউয়াদীঘি হাওরের পানি ভাটির দিকে ধীরে প্রবাহিত হচ্ছে।’

মৌলভীবাজারে বন্যাবন্যায় বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকেরা ধানের সঙ্গে গো-খাদ্য হিসেবে খড়ও হারিয়েছেন। সর্বশেষ আউশ থেকে কিছু খড় সংগ্রহের আশা থাকলেও বন্যায় এ ধানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ফলে গো-খাদ্য সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষক ও গৃহস্থরা। হাওর পাড়ে পানি দ্রুত না নামায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়ন ও রাজনগর কাউয়াদিঘী হাওর, হাকালুকি হাওরসহ হাইল হাওরপারের গ্রামে গ্রামে কৃষকেরা শুধু কচুরিপানা খাইয়ে গরু-বাছুর বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। সদর উপজেলার আটঘর গ্রামের শেখ খুরশেদ আলম বলেন, ‘শুধু কচুরিপানা খাইয়ে গরু-বাছুর বাঁচানোর চেষ্টা করছি। বন্যা পানি কিছুটা কমলেও গরু-ছাগলের খাওয়া নিয়ে ঝামেলায় আছি।’ একই কথা জানালেন স্থানীয় বসির খাঁ, জসিম উদ্দিন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্যা উপদ্রুত এলাকায় এক লাখ ৭১ হাজার ৩০টি গরু, ৩৩ হাজার ৩৩টি মহিষ, ৫৭ হাজার ৫৩টি ছাগল, সাত হাজার ৩৪৮টি ভেড়া, এক লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৭টি হাঁস ও ছয় লাখ ৫৩ হাজার ৬০৮টি মোরগ আছে।

মৌলভীবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হিদায়াতুল্লাহ সোমবার (১০ জুলাই) বিকালে বাংলা ট্র্রিবিউনকে বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে গবাদি পশুর জন্য তিন হাজার ১২১ টন দানাদার খাদ্য ও চার হাজার ৩৮৯ টন খড়ের চাহিদা দিয়েছি। তবে এখনও খাদ্য সংকট দেখা দেয়নি। তারপরও হিসাব দিয়ে রেখেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বন্যা যদি দীর্ঘস্থায়ী রূপ নেয় তাহলে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দেবে। বন্যাকবলিত এলাকায় টিকাদান ও চিকিৎসার জন্য ছয়টি পশুচিকিৎসক দল উপদ্রুত এলাকায় কাজ করছে।’

/এএম