মাগুরায় মাছের ঘাটতি ২০৮৩ মেট্রিক টন, পেশা ছাড়ছেন মৎস্যজীবীরা

মাগুরামাগুরায় মোট ১৮ হাজার ১৩১ মেট্রিক টন চাহিদার বিপরীতে মাছ উৎপাদন হয় এক হাজার ৬৪৭ দশমিক ৫৫ মেট্রিক টন।অর্থাৎ জেলায় বছরে মাছের ঘাটতি দুই হাজার ৮৩ দশমিক ৪৫ মেট্রিক টন। জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মাছে-ভাতে বাঙালি বলা হলেও মাগুরা জেলায় এ মৎস্য ঘাটতি হতাশাজনক। ইতিহাসবিদদের বক্তব্য অনুযায়ী মাগুর মাছের প্রাচুর্য্যরে কারণেই জেলার নামকরণ করা হয় মাগুরা। এছাড়াও জেলায় উল্লেখযোগ্য পরিমান মাছের প্রাকৃতিক উৎস ছিল। কিন্তু এখন সেগুলো বিলুপ্তির পথে। ফলে পেশা পরিবর্তন করছেন অনেক জেলে।

নবগঙ্গা নদীর জেলে নুরুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকে বাবার সঙ্গে এই নদীতে মাছ ধরে বড় হয়েছি। আগে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়তো। এখন জাল ফেললে আর মাছ ওঠে না। এ কারণে পরিবারের অধিকাংশ সদস্য অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছে।

জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় ব্যক্তিগত মালিকানায় পুকুর আছে ১৫ হাজার ১৪৯টি, সরকারি পুকুর ৫২টি, নদী ৮টি, বড়পিট ৬টি, বিল ১০৫টি, খাল ১৫৬টি, বাওড় ৫টি এবং মাছের অভয়াশ্রম ৬টি।

কিন্তু মাছের এসব অভয়াশ্রমের বিষয়ে কোনও তথ্য দিতে পারেনি মৎস্য বিভাগ।  মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামের নবগঙ্গা নদিতে একটি অভায়শ্রমে গিয়ে দেখা যায় যেখানে পানি নেই বললেই চলে।

জানা গেছে, ঘাটতি থাকায় পাশের জেলা থকে মাছ এনে ঘাটতি পূরণ করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই জেলায় মাছের দাম বেশ চড়া। তাই স্বল্প আয়ের মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই মাছ ছাড়াই চলছে।

আরও জানা গেছে, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জেলার পায় ২০ হাজার মানুষ জীবিকার জন্য মাছের ওপর নির্ভরশীল। জলাশয়ে পর্যাপ্ত পরিমান মাছ না থাকায় তাদের পেশাও অনেকটা হুমকির মুখে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমরা মাছের পোনা উৎপাদনের একমাত্র সরকারি হ্যাচারির সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ শুরু করেছি। আশা করছি আগামী তিন বছরের মধ্যে জেলার মৎস্য ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে।’

/এসএনএইচ/