তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে তাড়াশে এমপির মেজবানি

সিরাজগঞ্জে বুধবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে এমপির মেজবানিসিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদরে ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে মেজবানি অনুষ্ঠান করেছেন সরকার দলীয় স্থানীয় এমপি গাজী ম,ম আমজাদ হোসেন মিলন। বুধবার (১৯ জুলাই) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঠে বিশাল প্যান্ডেল বানিয়ে এ মেজবানি হয়।

এমপির স্ত্রী ডেইজি মিলন, দুই ছেলে ম, ম জাকির হোসেন জুয়েল ও ম,ম জার্জিয়াস মিলন রুবেল হজ করতে আগামী ২৪ জুলাই সৌদি আরব যাব্নে। এ উপলক্ষে এ মেজবানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।   

তাড়াশ ডিগ্রি কলেজ, ইসলামিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও তাড়াশ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একই সীমানা প্রাচীরের ভেতরে অবস্থিত। মাঠের মধ্যে বিশাল প্যান্ডেল বানিয়ে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কক্ষের ভেতরেও আগতদের খাওয়ানো হয়। অন্তত চার হাজার অতিথির জন্য পাঁচটি গরু ও পাঁচটি ছাগল জবাই দেওয়া হয়। প্যান্ডেল বানানো শুরু হয় মঙ্গলবার থেকে। রান্নাও করা হয় মাঠেই।

তাড়াশ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বুধবার দুপুরে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘স্কুলের অফিস খোলা রয়েছে। মাঠে এমপি সাহেবের অনুষ্ঠান চলছে। তাকে (এমপি) তো আমাদের সহায়তা করতেই হবে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসবে কি-না সেটা তাদের ব্যাপার।’

সিরাজগঞ্জে এমপির মেজবানির কার্ডতাড়াশ ইসলামিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সালাম বলেন, ‘স্কুলে শিক্ষার্থীদের চলমান পরীক্ষা বেলা ১টায় শেষ হয়েছে।’ অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে এর পর। ফলে ওই অনুষ্ঠানের কারণে তেমন কোনও অসুবিধা হয়নি বলেও দাবি করেন প্রধান শিক্ষক। 

তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি বলেন, ‘এমপির অনুষ্ঠানের কারণে আধাবেলা কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে, তাহলে মোবাইল ফোনে নয়, সামনে আসুন।’ এই বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।

এ বিষয়ে এমপি গাজী ম,ম আমজাদ হোসেন মিলন বলেন, ‘আমি কোনও প্রতিষ্ঠান বন্ধ করিনি। কলেজের অধ্যক্ষের অনুমতি নিয়েই অনুষ্ঠান করছি। গত রাত থেকে কলেজের কক্ষ ছাড়া অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানের কক্ষ ব্যবহার করা হয়নি। অনুষ্ঠানে ৩ থানার (তাড়াশ, রায়গঞ্জ ও সলঙ্গা) দলীয় নেতা-কর্মী, গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এসেছেন।’   

তাড়াশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির আলমগীর বলেন, ‘অনুষ্ঠানের দাওয়াত পেয়েছিলাম, কিন্তু যেতে পারিনি। বিদ্যালয় বন্ধ করে অনুষ্ঠান করা হলেও আমাদের কাছ থেকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও অনুমতি নেননি বা বন্ধ করার বিষয়ে আগে থেকে অবগতও করেননি।’

তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবিরের ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল ফোনে বার বার কল ও এসএমএস দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।

/এএম