প্রথম বছরেই সাফল্য নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের

নেত্রকোনানেত্রকোনার হাওর এলাকা মোহনগঞ্জ উপজেলায় প্রথম কলেজ হিসেবে ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়। চলতি বছরই প্রথমবারের মতো এই কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায়। আর তাতেই বাজিমাত করেছে তারা। কলেজের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করে এ বছরের পরীক্ষায়। তাতে করে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ গোটা এলাকাতেই ছড়িয়ে পড়েছে খুশির আমেজ।

শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জীবন কুমার রায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রথমবারের মতো এ কলেজ থেকে ২৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায়। তাদের সবাই পাস করেছে। আমরা এই ফলাফলে ভীষণ খুশি।’

চলিত বছরে জেলার মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীর ছোট-বড় ১৩৪টি হাওর এলাকায় বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ অঞ্চলের মানুষের একমাত্র আয়ের পথ ধান চাষ ও হাওরের মাছ আহরণ। এ বছরে আগাম বন্যা আর পাহাড়ি ঢলে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় মানুষের মনে ছিল বিষাদ। শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষার ফল সেই বিষাদকে ছাপিয়ে আনন্দ ছড়িয়ে দিয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, চাষবাস ও মৎস আহরণের মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষ দেশের অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখছে। কিন্তু এই এলাকায় শিক্ষার প্রসার একেবারেই ঘটেনি। কলেজ পর্যায়ে এসে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হারও ‍ছিল অনেক বেশি। সেই ঘাটতি পূরণেই স্থাপন করা হয়েছিল শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়।

কলেজটির গভর্নিং বডির সভাপতি ও নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক ড. মো. মুশফিকুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই এলাকার শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিকের পড়ে অধিকাংশই ঝরে পরে। এটা রোধ করতে এবং সরকারের শিক্ষার মানোন্নয়নের অংশ হিসেবে আমরা এই কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছি। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে এনে আমরা এই কলেজে ভর্তি করেছি। কিন্তু প্রথম বছরেই তারা এমন অসাধারণ ফল উপহার দেবে, সেটা ভাবিনি।’ হাওরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনে এই কলেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ জানান তিনি।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ ও নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে ১৯৭০-এর নির্বাচনে গণপরিষদের নির্বাচিত সদস্য ডা. আখলাকুল হোসেন আহমদের ছেলে সাজ্জদুল হাসানের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় এই কলেজটি।

/টিআর/আপ-এনআই