স্থানীয়দের কাছে জানা গেছে, আকাশের বাবা আক্তার খাঁ একজন রাজমিস্ত্রি, মা বাসাবাড়িতে রান্নার কাজ করেন। ছেলে আকাশ ও স্ত্রীকে নিয়ে আক্তার খাঁ থাকেন শহরের মিয়াপাড়া একটি ভাড়া বাসায়। শহরের আসার পর মাদক সেবন, চুরিসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে আকাশ। মাদক সেবনের অভিযোগে আকাশকে বেশ কয়েকবার মারধরও করে স্থানীয়রা। সম্প্রতি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে একটি মামলায় আদালতে চালান দেয়। পরে আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হয় সে। তবে আকাশ কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সস্পৃক্ত ছিল না।
মিয়াপাড়ায় আকাশদের বাসায় গিয়ে দেখা গেছে, বাসায় কেউ নেই। দরজা তালাবন্ধ। অভিযুক্ত আকাশের চাচাও তাদের দোকান বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছে। ফলে আকাশের পরিবারের কোনও সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে আকাশ সম্পর্কে নেতিবাচক কথাই বললেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় অধিবাসী হাসিবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বখাটে আকাশ তার বাবা ও মাকে নিয়ে মিয়াপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকত। সে মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ে। তার অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকাবাসী একাধিকবার মারধরও করেছে। তারপরেও শুধরায়নি আকাশ।’
এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যতে শোকের মাতক চলছে মাহাবুবের পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে। নিহত কাজী মাহাবুবের সহপাঠী ও প্রতিবেশী শেখ বদরুল আলম নাসিম বলেন, ‘মাহাবুবের মেয়েকে বখাটে আকাশ প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। তাকে নিষেধ করলেও সে শোনেনি।’
নিহতের স্ত্রী তাপসী রবেয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আকাশ মাঝে মধ্যেই আমাদের হুমকি দিতো। সে প্রায়ই আমাদের কাছে টাকা দাবি করে আসছিল। কিন্তু আমরা তাকে টাকা দিতে অস্বীকার করলে সে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। পরে তো আমার স্বামীকেই কুপিয়ে রেখে ফেলে যায় আকাশ ও তার দলবল।’
উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জে শহরের পাবলিক হল রোডের বাসিন্দা কাজী মাহাবুবের মেয়ে বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত বখাটে আকাশ। এ বিষয়ে কাজী মাহবুব থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ কয়েকদিন আগে আকাশকে ধরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। এর জের ধরে গত শনিবার (১৫ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শহরের পাবলিক হল রোডে বখাটে আকাশের (২২) নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী মাহাবুবকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে পালিয়ে যায়। রবিবার (২৩ জুলাই) গভীর রাতে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাজী মাহাবুব মারা যান।
নিহত কাজী মাহাবুব গোপালগঞ্জ সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের একজন স্টাম্প ভেন্ডর ও হরিদাসপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার ছিলেন।
আরও পড়ুন-
মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ, বাবা খুন
মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে খুন, ২৪ ঘণ্টায়ও মামলা হয়নি
/এআর/টিআর/