বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায় দিনমজুরের কাজ করে জিপিএ-৫ পাওয়া সোহেল

বাবা-মায়ের মাঝখানে দাঁড়ানো সোহেল রানা। ছবি-প্রতিনিধি

আজন্ম পেটের সঙ্গে যুদ্ধ করেও থেমে থাকেনি তার আলোকিত হওয়ার সাধ। দিনমজুর বাবার অভাবের সংসারে দুবেলা খেয়ে না-খেয়ে কোনমতে বেঁচে থাকাটাই যেখানে কঠিন, সেখানে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া রীতিমতো চমক জাগানো ব্যাপার। এ অসাধ্যই সাধন করেছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চন্দ্রখানা গ্রামের সোহেল রানা নামের এক তরুণ।

কিন্তু এ যেন হরষে বিষাদ! এইচএসসিতে চমক দেখানো এই তরুণের চোখে এখন শুধুই অন্ধকার। লেখাপড়ার দরজা বন্ধ হওয়ার ভয় ভর করেছে তার মনে। আর্থিক অনটনের কারণে কোথাও ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবেন কিনা তা নিয়েই এখন শ্বাস বন্ধ হওয়ার জোগাড়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অনেক সাধ যে তার!

এ ব্যাপারে সোহেল রানা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কখনও টিউশনি করে, আবার কখনও দিনমজুর বাবার সঙ্গে অন্যের জমিতে কাজ করে পড়ালেখার খরচ যোগাড় করেছি। ছোট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখি। জানি না পূরণ হবে কিনা।’

দিনমজুরের কাজ করেও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে এখন উচ্চশিক্ষা নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন সোহেল। আশা ও হতাশার দোলাচলে পড়েছেন তার পরিবার।

মা শেফালি বেগম জানান,  অভাবের সংসার। তবুও খেয়ে না-খেয়ে ছেলেকে পড়ালেখা করাতে চেয়েছি। যতটুকু সাধ্য ছিল সাহায্য করেছি। সে নিজেও টিউশনি করে এবং জমিতে কাজ করে নিজের খরচ চালিয়েছে। কিন্তু তাকে আর পড়ানোর মতো সামর্থ্য নাই আমাদের। পরিবারের অর্থিক সংকটের কারণে সোহেলের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলেও জানান তার মা।

সোহেলের বাবা জহুরুল একজন দিনমজুর। ছেলের জন্য এখন কী করবেন তাও ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। 

এএইচ/