স্কুলছাত্রীর সঙ্গে ভিডিও ধারণ, আটকের পর ৪০ হাজার টাকায় মুক্তি

মাদারীপুরমাদারীপুরে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে এক স্কুলছাত্রীর সাথে দেখা করতে গিয়েছিল তিন স্কুলছাত্র। এ সময় তারা ইজিবাইকে পাশাপাশি বসে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে থাকে। এ ঘটনায় পুলিশ ফাঁড়িতে প্রায় ২২ ঘন্টা আটকে রাখা হয় শিক্ষার্থীকে। বৃহস্পতিবার বিকেলে আটকের পর শুক্রবার দুপুরে পরিবারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা আদায়ের পর তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।

ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার মিঠাপুর এল. এন. উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের সুবাদে দুই বন্ধু নিয়ে ঘুরতে যায় পাশের হাসানকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক স্কুলছাত্র। ইজিবাইকে ঘোরাফেরা শেষে স্কুলে নামিয়ে দেওয়ার সময় স্থানীয় কয়েকজন তরুণ তাদের আটক করে। এ সময় তারা মোবাইলে পাশাপাশি আপত্তিকর ভিডিও তুলেছে অজুহাতে ওই তিন স্কুলছাত্রকে বেদম মারধর করে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ তাদের আটক করে মাদারীপুরের চরমুগরিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। রাতে মিঠাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমানসহ ম্যানেজিং কমিটি এবং ওই স্কুলছাত্রীর অভিভাবকদের পক্ষ থেকে কোন আপত্তি নাই মর্মে লিখিত দেয়া হলেও টাকা না দেওয়ায় তিন স্কুলছাত্রকে পুলিশ ফাঁড়ির মধ্যে হাজতখানায় আটকে রাখা হয়।

মাদারীপুরের শিরখাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, স্কুলছাত্রের পরিবার নিতান্তই দরিদ্র। তাদের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। রাতে তারা অনেক কষ্ট করে অল্প কিছু টাকা জোগাড় করে ফাঁড়িতে গেলেও তাদের ছাড়া হয়নি। পুলিশের কর্মকর্তা ৪০ হাজার টাকা আদায়ের পর দুপুর আড়াইটার দিকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চরমুগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) আজমগীর হোসেন বলেন, ওই ছাত্রদের কাছ থেকে কোন আপত্তিকর ভিডিও পাওয়া যায়নি, শুধু ইজিবাইকে পাশাপাশি বসে তোলা ছবি পাওয়া গেছে। তাদের পরিবারের কাছ থেকে পুলিশ কোনও টাকা আদায় করেনি।

কোনও অভিযোগ না থাকার পরও রাতে মুক্তি না দিয়ে হাজতখানায় আটকে রাখার ব্যাপারে তিনি বলেন, একটু দেরি হয়ে গেছে আর কি!

মাদারীপুর জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব সাংবাদিকদের বলেন, টাকা আদায়ের ব্যাপারে যদি কেউ কোন অভিযোগ দেয় তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

/এমপি/