খুনি মোশতাকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, রশিদের সাজা কার্যকরের দাবি

মোশতাক-রশিদ (ছবি-সংগৃহীত)জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যায় মদদদাতা খন্দকার মোশতাকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কর্নেল (অব.) আবদুর রশিদকে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন কুমিল্লার সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতারা।

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দশপাড়া গ্রামে খন্দকার মোশতাকের বাড়ি। সীমানা প্রাচীরে ঘেরা বাড়িতে দোতলা একটি ভবন রয়েছে। এছাড়া,একটি মসজিদ ও পারিবারিক কবরস্থানও রয়েছে। অন্য কবরে নামফলক থাকলেও মোশতাকের কবরে তা নেই। প্রথমে থাকলেও পরে তা সরিয়ে ফেলা হয়। মোশতাকের এক ছেলে খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রে, মেয়ে খন্দকার শিরিন সুলতানা ও ডা. খন্দকার নাজনীন সুলতানা লন্ডনে থাকেন। বাড়িটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সেখানে জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপনের দাবি স্থানীয়দের।

এদিকে, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার আরেক আত্মস্বীকৃত খুনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদের বাড়ি জেলার চান্দিনার ছয়ঘরিয়া গ্রামে। ২০১৬ সালের ১৪ জুন স্থানীয় প্রশাসন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক এই আসামির বাড়িসহ ওই উপজেলার ছয়ঘরিয়া, পানিপাড়া, করতলা ও থানগাঁও মৌজার ৬ দশমিক ১২ একর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর দেশ ছেড়ে যায় রশিদ। এর আগে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনে অংশ নিয়ে  সংসদ সদস্য হয় সে। ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশে রশিদের আরও  ১০ দশমিক ৮২ একর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। রশিদ ও তার পরিবারের প্রায় ১৭ একর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়।

বিদেশে পালিয়ে থাকা রশিদকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার দাবি স্থানীয়দের। এছাড়া, তার বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তি সামাজিক কাজে ব্যয় করারও দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

দাউদকান্দির জায়গীর গ্রামের আবদুল কাদির তালুকদার বলেন, ‘খন্দকার মোশতাক মন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট থাকার সময় আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা দিয়ে আমাদের বিপুল সম্পত্তি দখল করে। আমরা আমাদের সম্পত্তি ফেরত চাই।’ তিনি মোশতাকের অন্যান্য সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা সামাজিক কাজে লাগানোর দাবি জানান।

দাউকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম কেরামত আলী বলেন, ‘ব্যক্তি চরিত্রের দিক থেকেও খন্দকার মোশতাক ভালো মানুষ ছিল না। সে অনেকের সম্পত্তি দখল করেছে। মোশতাকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানাচ্ছি।’ কর্নেল রশিদসহ পালিয়ে থাকা খুনিদের সাজা কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আদালত কর্নেল রশিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছেন। সেখানে আইসিটি পার্ক নির্মাণে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে খন্দকার মোশতাকের সম্পত্তির বিষয়ে কোনও নির্দেশনা পাইনি। আদালতের অনুমতি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’

/এএম/