সিরিজ বোমা হামলার সময় শায়খ আব্দুর রহমান কি মুন্সীগঞ্জেই ছিলেন?

জেএমবি প্রধান শায়খ আব্দুর রহমান (ছবি- অনলাইন থেকে নেওয়া)

১৭ আগস্ট, ২০০৫। দেশের ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলা ঘটালেও কেবল মুন্সীগঞ্জে কোনও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটায়নি বা ঘটাতে পারেনি জামা’তুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)।

সারাদেশের ৬৩ জেলায় প্রায় ৫০০ বোমা হামলায় দুইজন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ৬৩ জেলায় বোমা হামলা হলেও কেন মুন্সীগঞ্জে বোমা হামলা করা হয়নি, তা এখনও রহস্য। কারও কারও ধারণা জেএমবি প্রধান শায়খ আব্দুর রহমান সে সময় মুন্সীগঞ্জে অবস্থান করছিল। এই কারণেই হয়তো মুন্সীগঞ্জে বোমা হামলা করেনি জেএমবি। তবে এ ব্যাপারে কোনও ধারণা নেই বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দারা।

মুন্সীগঞ্জ ডিবি’র কর্মকর্তা এসআই মোশারফ হোসেন বলেন,‘শায়খ আব্দুর রহমান মুন্সীগঞ্জে ছিল কিনা এ ব্যাপারে আমাদের কোনও ধারণা নেই।’

সারাদেশে বোমা হামলার সময় জঙ্গিরা মূলত আদালত এলাকাকে টার্গেট করে। আইনজীবী, বিচারক ও পুলিশই ছিল তাদের মূল টার্গেট। ৬৩ জেলায় বোমা হামলা হলেও মুন্সীগঞ্জে না হওয়ায় আদালত পাড়াসহ সব জায়গায় সেসময় অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছিল। বিশেষ করে আদালতের আইনজীবী ও মক্কেলদের মধ্যে একটা আতঙ্ক দেখা দিয়েছিল। এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ বার সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেক্সোনা আক্তার লাকী বলেন, ‘আতঙ্ক ছিল যে কখন হামলা হয়। তবে পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীরা খুব সক্রিয় ছিলেন। প্রত্যেক আইনজীবীকে পরিচয়পত্র দেখিয়ে আদালতে প্রবেশ করতে হতো। নিরাপত্তারক্ষীরা সবাইকে চেক করে আদালতে ঢুকতে দিতেন।’

মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ‘সারাদেশে বোমা হামলার সময় শায়খ আব্দুর রহমান মুন্সীগঞ্জে ছিল কিনা এ ব্যাপারে আমাদের আসলে কোনও ধারণা নেই। এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভালো বলতে পারবে। তবে এ পর্যন্ত মুন্সীগঞ্জে জঙ্গিদের কোনও কর্মকাণ্ড কোথাও দেখা যায়নি।’

মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মুন্সীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘সারাদেশে বোমা ফেটেছে। কিন্তু মুন্সীগঞ্জে আমাদের (আওয়ামী লীগের) একটা অবস্থান আছে বলেই জঙ্গিরা এখানে বোমা ফাটাতে পারে নাই। আমাদের এমন একটা অবস্থান ছিল বলে তারা এ ধরনের কোনও কিছু ঘটাতে সাহস ও সুযোগ পায় নাই। ১৯৭১ সালের পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গিরা কমবেশি শক্তি সঞ্চয় করলেও মুন্সীগঞ্জে তা পারে নাই।’

মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল আলম পিপিএম বলেন, ‘তদন্তে যদিও ওইভাবে আসে নাই, কিন্তু আমরা শুনেছি যে জঙ্গিরা এখানে হামলার করার সময় পায় নাই।’

শায়খ আব্দুর রহমান ওই সময় মুন্সীগঞ্জে অবস্থান করছিলেন না বলেও দাবি করেন পুলিশ সুপার।

/বিএল/এপিএইচ/