শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

শেরপুরে বন্য পরিস্থিতির অবনতিশেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে সদর উপজেলার ৬ ইউনিয়নের অন্তত ৫০টি গ্রাম। ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ায়  শেরপুর-জামালপুর সংযোগ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত গত ৩৬ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি শেরপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এতে শেরপুর-জামালপুর সংযোগ সড়কের ডাইভারশনের ওপর দিয়ে চার ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

টানা বৃষ্টি  ও পাহাড়ী ঢলে শেরপুরের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি প্রবাহ বেড়েছে ও নদের বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে সদর উপজেলার চরপক্ষীমারি, কামারেরচর , চরমোচারিয়া, লছমনপুর, বলায়েরচর ও বেতমারী ঘুঘরাকান্দি ইউনিয়নের অন্তত ৫০টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ফলে এসব এলাকার চলতি রোপা আমন ও সবজিক্ষেত তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে  শত শত পুকুরের মাছ । পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।

চরপক্ষিমারি ইউনিয়নের চয়ারম্যান মো. আব্দুর রউফ জানান, তার ইউনিয়নের ৮টি গ্রামের সবগুলোই বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। পানি এখন ঘরে প্রবেশ করছে। নতুন করে বেপারীপাড়া এলাকায় শুরু হয়েছে নদী ভাঙন।

বন্যার পানিতে জলমগ্ন হওয়ায়  শেরপুর সদরের ২০টি সরকারি  প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ  ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা  মো. নূরে আলম মৃর্ধা।

শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বন্যায় শেরপুর সদরের চরাঞ্চলের ৬ ইউনিয়নের অন্তত ১৫ হাজার লোক পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। গত দুইদিনে বন্যার পানিতে ডুবে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ৭ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।’

জেলা প্রশাসক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন জানান, শেরপুর সদরে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে জেলার ৪ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য ২৫ মেট্রিক টন চাল ও ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

এ দিকে শুক্রবার (১৮ আগষ্ট) বন্যা দুর্গত এলাকা কামারেরচর ইউনিয়ন পরিদর্শন করেন  জাতীয় সংসদের  হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি।

ব্রক্ষপুত্র নদের পানি বাড়ায় জেলার শ্রীবরদী উপজেলার ভেলুয়া ও খড়িয়া কাজির চর ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রাম  প্লাবিত হয়েছে। শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, এ দুই ইউনিয়নে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ও সবজিক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে ভেলুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, তার ইউনিয়নের ১১টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ওইসব গ্রামের ১০ হাজার মানুষ। ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পানি উঠায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

এদিকে শুক্রবার (১৮ আগষ্ট) শ্রীবরদী উপজেলার ভেলুয়া ইউনিয়নের বানভাসিদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করেন শেরপুর-৩ আসনের এমপি প্রকৌশলী এ.কে.এম ফজলুল হক চাঁন।

/এসএনএইচ/