ঈদুল আজহা উপলক্ষে খুলনায় ৩৩ পশুর হাট

গরুর হাট (ছবি: সংগৃহীত)

ঈদুল আজহা উপলক্ষে মহানগরসহ খুলনায় ৩৩টি পশুর হাটে প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে বটিয়াঘাটা উপজেলার বারোআড়িয়ায় ছাগলের হাট বসতে শুরু করেছে।  ২৬ আগস্ট মহানগরীর জোড়াগেট পশুর হাটের উদ্বোধন করা হবে। এছাড়া জেলার অধিকাংশ হাটের শুরুর প্রক্রিয়া শেষের পর্যায়ে রয়েছে। জেলা প্রশাসনের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

খুলনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোয়েন্দা) সিএ হালিম  জানান, কোরবানির পশুবাহী ট্রাককে পথে আটকানো যাবে না। কোরবানির পশু ও ব্যাপারীদের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পুলিশের টহল থাকবে। প্রত্যেক হাটে একজন অফিসারের নেতৃত্বে ৫-৬ জন পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন। বড় হাটগুলোর পাশের সড়কে পুলিশের টহল থাকবে।

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক জানান, আমাদি ও দেউলিয়া হাট সংলগ্ন এলাকায় মটর সাইকেল করে পুলিশ টহল দেবে।

র‌্যাব-৬ এর কমান্ডিং অফিসার খোন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পশুর হাটে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিটি হাট ও হাট সংলগ্ন সড়কে র‌্যাবের টহল থাকবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ মো. আনোয়ার উল ইসলাম জানান, মহানগরীসহ খুলনা জেলায় খামারিদের তত্ত্বাবধানে ১৬ হাজার ২৩৯টি গরু এবং ৯ হাজার ৭৮৩টি ছাগল মোটা তাজাকরণের প্রক্রিয়া চলছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনার উপ-ব্যবস্থাপক (দাবি) সোহেল নওরোজ জানান, কেসিসি পরিচালিত মহানগরীর জোড়াগেট পশুর হাটে জাল নোট প্রতিরোধে সোনালী, প্রাইম ও ব্রাক ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ৩০টি বুথ স্থাপন করা হবে।

জানা যায়, জোড়াগেট কোরবানির পশুর হাট ২০১৭ কমিটির সভায় ৩০টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে: জোড়াগেট পশুর হাটে পুকুরের পানি নিষ্কাশন, হাটের ভিতরের সড়কের নিচু স্থান উচু করা, মাঠের নিচু জমিতে বালু ফেলা, বাথরুমগুলো ব্যবহারের উপযোগী করা, লাইট পোস্টে বাতি লাগানো, ২টি হাসিল ঘর ব্যবহারের উপযোগী করা, ২টি র‌্যাম তৈরি করা, নিরাপত্তার জন্য আনসার বাহিনী মোতায়েনের জন্য যোগাযোগ করা, হাটে পর্যাপ্ত খাবার পানি নিশ্চিত করার লক্ষে গভীর নলকূপ রক্ষণাবেক্ষণ, ভ্রাম্যমান টয়লেটের ব্যবস্থা, যত্রতত্র যনে পশুর হাট না বসে এজন্য জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করা, ফুলবাড়ীগেট পশুর হাটের অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধে পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করা,হাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ; পোস্টার, লিফলেট ও ব্যানার আগেই তৈরি করা; পিকচার প্যালেস মোড়ে হাটের প্রচারণার জন্য আগেই মাইক বসানো, খুলনার বিভিন্ন হাটে জোড়াগেট পশুরহাটের ব্যাপারে প্রচারণার করা, নগরীতে ১৫ দিন আগে থেকে মাইকে প্রচারণা শুরু, নগরীর ভিতরে পোস্টার-ব্যানার লাগানো, হাটের জাল নোট সনাক্তকরণের জন্য ও হাসিল আদায় টাকা জমা রাখার জন্য কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ, নিজস্ব জেনারেটরের ব্যবস্থা, হাটে দায়িত্ব পালনকারীদের পরিচয়পত্র তৈরি ও বিতরণ করা, হাটের ভিতর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা, গত বছর দায়িত্ব পালনসহ নানা অনিয়মের দায়ে শোকজকৃত কেসিসির কর্মচারীদের হাটের দায়িত্ব পালন করা থেকে বিরত রাখা, হাটে ২৪ ঘণ্টা পশু ও মানব চিকিৎসক থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা ওসিসি ক্যামেরা বসানো।

কেসিসি’র বাজার সুপার গাজী সালাউদ্দীন জানান, ঈদুল আযহা উপলক্ষে ২৬ আগস্ট জোড়াগেটে কোরবানির পশুরহাটের উদ্বোধন করা হবে। এবার দুযোর্গ মোকাবিলার জন্য আগেভাগেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ২০১৬ সালে এ পশুর হাট পরিচালনা করে কেসিসি’র রাজস্ব আয় ছিল ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪৬ হাজার ৫শ৫২ টাকা।

জেলা প্রশাসনের সূত্র জানায়, এবারের হাটগুলোর মধ্যে রয়েছে মহানগরীর জোড়াগেট, ডুমুরিয়া উপজেলার খর্নিয়া, শাহাপুর, আঠারো মাইল, চুকনগর, পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী, গদাইপুর, কাছিকাটা, পাইকগাছা জিরোপয়েন্ট, দাকোপ উপজেলার বাজুয়া, চালনা, কয়রা উপজেলার দেউলিয়া, গোবিন্দপুর, কালনা, ঘুগরাকাঠি, মান্দারবাড়িয়া, হোগলা, ফুলতলা উপজেলা সদর, দিঘলিয়া উপজেলার এম এম মজিদ কলেজ মাঠ ও জালাল উদ্দিন কলেজ মাঠ, পথের বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তেরখাদা উপজেলার ইখড়ি কাটেঙ্গা, বটিয়াঘাটা উপজেলার বাইনতলা, খুটিরহাট, উপজেলা সদর, বারোআড়িয়া, রূপসা উপজেলার আমতলা, তালিমপুর ও পূর্ব রূপসা বাস স্ট্যান্ড।

/এএইচ/