বৃত্তি জালিয়াতির অভিযোগে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার

আবুল কাশেম প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর বৃত্তি জালিয়াতির অভিযোগে আবুল কাশেম নামের এক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে রাজশাহী জেলা পুলিশ লাইনের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে সকালে নগরীর রাজপাড়া থানায় তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে থানায় একটি মামলা হয়। আবুল কাশেমের বাড়ি রাজশাহী নগরীর ভদ্রা এলাকায়।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ সহকারী পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এরপর দুদকের এই কর্মকর্তাই আবুল কাশেমকে গ্রেফতার করেন।

রাজশাহী দুদকের উপ পরিচালক শেখ ফায়াজ আলম বলেন, ‘দুদকের সহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিনুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেমকে গ্রেফতার করা হয়। এ মামলায় মোট তিনজনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে অন্যতম আসামি হলেন আবুল কাশেম। মামলার অপর দুই আসামি হলেন তৎকালীন বোয়ালিয়া থানা শিক্ষা কর্মকর্তা রাখি চক্রবর্তি ও কম্পিউটার অপারেটর সোনিয়া খাতুন। এদের ধরতে অভিযান চালানো হবে।’

তিনি আরও বলেন ‘একজন শিক্ষা কর্মকর্তা হয়েও তিনি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি নিয়ে যে ধরনের অনিয়ম করেছেন। তা বড় ধরনের অপরাধ। এই ধরনের অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। তাই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।’

মামলার বাদী দুদকের উপ সহকারী পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ বলেন, ‘রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার থাকার সময় ২০১৫ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় নিজ কন্যা নিশাত নওরিন ইশাসহ ৪০ জন শিক্ষার্থীর নম্বর বাড়িয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে বৃত্তি দেন। সেসময় বিষয়টি পত্রিকায় আসে। আরও অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক অভিযোগটি তদন্ত করে সত্যতা পায়। এরপর সোমবার সকালে মামলা দায়ের করা হয়।’

তিনি আরও জানান, বিভাগীয় মামলায় আবুল কাশেম বেশ কিছুদিন বরখাস্ত ছিলেন। গত ৮ আগস্ট তিনি আবারও চাকরি ফিরে পান। এরপর তিনি চট্টগ্রামের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে সংযুক্তিতে কর্মরত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকের বৃত্তিতে ফল জালিয়াতির অভিযোগটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরও তদন্ত করেছে। সেখানেও এই জালিয়াতি ধরা পড়েছে। পরে ওই ৪০ শিক্ষার্থীর বৃত্তি বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে এ জালিয়াতির ঘটনায় আবুল কাশেমসহ তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও হয়েছে। এরপর আবুল কাশেমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।’

রাজশাহী মহানগর পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম বলেন, ‘দুদক গ্রেফতারকৃত শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেমকে সোমবার বিকাল ৫ টায় থানায় রেখে গেছেন। আদালতে দুদক কর্মকর্তারাই সোপর্দ করবেন। তারা শুধু তাকে থানা হেফাজতে রেখে গেছেন।’