লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করার নির্দেশে জামালপুরের চাল ব্যবসায়ীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

৩০ অক্টোবরের মধ্যে চাল ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছেচাল ও গমের বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য চলতি মাসের ২ অক্টোবর দেশের সব চাল ও গম ব্যবসায়ীদের নতুন করে লাইসেন্স নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এর জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। এ উদ্যোগকে ক্রেতারা সাধুবাদ জানালেও চাল ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তাদের কেউ কেউ সরকারের এই উদ্যোগকে বাড়তি বিড়ম্বনা বলে অভিহিত করছেন। কেউ কেউ বলছেন, এই উদ্যোগ ছোট ছোট চাল ও গম ব্যবসায়ীদের নিরুৎসাহী করবে।

জেলা খাদ্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের উদ্যোগ বাস্তবায়নে এরই মধ্যে জেলার প্রতিটি উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাদের গ্রামের হাট বাজারগুলোতে লিফলেট ও মাইকিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল কুদ্দুস সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যারা এক টন পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত করবেন, তাদের এই লাইন্সেসের আওতায় আসতে হবে। চাল ও গমের খুচরা ব্যবসায়ীদেরও ভ্যাটসহ সাড়ে ১১শ টাকার মাধ্যমে এই লাইন্সেস নবায়ন করতে হবে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, ১৫ দিন পর পর ব্যবসায়ীদের তাদের গুদামে মজুত করা চাল-গমের হিসাবও স্থানীয় খাদ্য দফতরকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। খুচরা ব্যবসায়ী ও স্বল্প মজুতদাররা লাইন্সেসের আওতায় আসায় তাদের বাড়তি ঝামেলায় পরতে হবে।’

মেলান্দহ উপজেলার দুরমুঠ কালিবাড়ী এলাকার চাল ব্যাসায়ী মেসার্স রিমি অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী মাসুদ মিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা বড় ব্যবসায়ীরা প্রথমে ছয় হাজার টাকা দিয়ে খাদ্য অধিদফতরের লাইসেন্স করেছি, যা প্রতিবছর তিন হাজার টাকা দিয়ে নবায়ন করতে হয়। তবে ছোট চাল ব্যবসায়ীদের এই লাইসেন্সের আওতায় আনাটা ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এতে করে ছোট ব্যবসায়ীরা মাঝেমধ্যেই অভিযানের নামে পুলিশি হয়রানির শিকার হবেন। এতে করে তারা নিরুৎসাহিত হবেন। সাধারণ ভোক্তাদেরও বেকায়দায় পড়তে হতে পারে।’

জামালপুর শহরের স্টেশন বাজারের চাল ব্যবসায়ী সুরঞ্জন সাহা, শ্যামল সাহা, আব্দুল খালেক, শহরের বানিয়া বাজারের চাল ব্যবসায়ী আ. ছাত্তার মিয়া, দুরমুঠ কালিবাড়ী বাজারের ছোট চাল ব্যবসায়ী জহুরুল হক, হিরু মিয়া, কাশেম মিয়া বলেন, সরকারের নেওয়া এই পদক্ষেপকে তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া বাড়তি ঝামেলা মনে করছেন। এর কারণে অভিযানের নামে পুলিশি হয়রানির আশঙ্কা করছেন তারাও।

এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কুদ্দুছ হাওলাদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চাল ও গমের বাজার স্থিতিশীল রাখতেই সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে। আমি মনে করি, এতে করে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।’
আরও পড়ুন-
লাইসেন্স নিয়ে বিভ্রান্তি চাল ব্যবসায়ীদের
লাইসেন্স নেওয়ার নির্দেশ জানানো হয়নি, অভিযোগ হবিগঞ্জের চাল ব্যবসায়ীদের