‘পুলিশের হাতে নয়, জনতার মারধরেই শাহজালালের চোখে সমস্যা’

সংবাদ সম্মেলনে বাবা ও ভাইসহ সুমা আক্তার (ছবি: খুলনা প্রতিনিধি)পুলিশের হাতে নয়, বরং ছিনতাইয়ের পর জনতার মারধরেই খুলনায় শাহজালালের চোখ নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেছেন ছিনতাই মামলার বাদী সুমা আক্তার। পুলিশ ছিনতাই মামলায় আদালতে চার্জশিট দেওয়ার পরও তিন মাসে ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধার না হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। বুধবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সুমা আক্তার।   








খুলনার খালিশপুরে পুলিশ কর্তৃক দুই চোখ উপড়ে ফেলা যুবক মো. শাহজালালের বিরুদ্ধে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সুমার ভাই জাহিদ হোসেন ও বাবা শুকুর আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুমা আক্তার বলেন, ‘আমার ভাই সেলিম জাহাঙ্গীর ও নুরুল ইসলাম পুলিশের কনস্টেবল। সেলিম মেহেরপুর থেকে বদলি হয়ে ডিএমপিতে ও নুরুল ইসলাম কেএমপির যানবাহন শাখায় কর্মরত। তারা ছিনতাই মামলা নিয়ে কোনও খবরদারি করছেন না। ঘটনার রাতে আমার সঙ্গে ভাই জাহিদ হোসেন থানায় ছিলেন। ছিনতাইয়ের ঘটনার পর আমি ভয় পেয়েছিলাম। ছিনতাইয়ের পর জনতার হাতে ধরা পড়া শাহজালাল সুস্থ ছিল। এরপর জনতার মারধরে তার চোখে সমস্যা হয় বলে পরদিন পত্রিকার খবরে জানতে পারি।’

গত ১৫ অক্টোবর মো. শাহজালাল বিচারের দাবিতে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এরপরই ছিনতাই মামলার বাদী তার বিষয়ে বুধবার এই সংবাদ সম্মেলন করলেন। সংবাদ সম্মেলনে শাহজালাল (ছবি: খুলনা প্রতিনিধি)


এদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে শাহজালালের মায়ের দায়ের করা মামলার ধার্য দিনে বুধবার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেনি। পিবিআই’র পক্ষ থেকে আদালতে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত আগামী ২৬ ডিসেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন। রেনু বেগমের পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অ্যাডভোকেট মো. মোমিনুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৮ জুলাই দিনগত রাতে মো. শাহজালালকে গ্রেফতার দেখিয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছিনতাইয়ের অভিযোগে জনতার মারধরে শাহজালালের দুই চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয় বলে পুলিশ দাবি করে। তবে শাহাজালালের দাবি, পুলিশ ১৮ জুলাই হঠাৎ করেই তাকে আটক করে এবং থানায় নিয়ে দুই দফা মারধর করে। পরে গভীর রাতে বিশ্বরোড এলাকায় নিয়ে চোখ উপরে ফেলে। এ অভিযোগে গত ৭ সেপ্টেম্বর শাহজালালের মা রেনু বেগম বাদী হয়ে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম খানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

আরও পড়ুন- ‘ওসি বুকে ওঠে, এসআই তাপস মাথা ধরে, এসআই সেলিম রেঞ্চ দিয়ে চোখ তোলে’