গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে গৃহবন্দি চট্টগ্রামবাসী

বৃষ্টিতে প্লাবিত নিম্নাঞ্চল (ছবি- চট্টগ্রাম ব্যুরো)

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে শনিবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকেই চট্টগ্রামের আকাশ কালো মেঘে ঢাকা ছিল। এতে সারা দিনই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। একইসঙ্গে ছিল ঠাণ্ডা বাতাস। তাই আজ (শনিবার) ছুটির দিন হওয়ার পরও কার্যত গৃহবন্দি ছিলেন নগরবাসী।

নিম্নচাপের প্রভাবে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে চট্টগ্রামে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়, যা আজ (শনিবার) বিকাল পর্যন্ত থেমে থেমে ঝরেছে। শনিবার সন্ধ্যার দিকে আকাশ কালো করে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। এতে প্লাবিত হয় নগরীর বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল।

এদিকে, সন্ধ্যার বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসফেরত নগরবাসী। এসময় সড়কে যানবাহন কম থাকায় বাসায় ফিরতে তাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। যানবাহন না পেয়ে অনেকে বাসায় ফিরেছেন বৃষ্টিকে ভিজে হেঁটে হেঁটে।

নগরীর সিইপিজেড এলাকার একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অফিস শেষে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছি। বৃষ্টির কারণে সড়কে যানবাহন চলাচল কম থাকায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে এসময় অনেকে বৃষ্টিতে ভিজে যান।’

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১১৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল থেকে থেমে থেমে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। রবিবার সকাল পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট নিম্ন বায়ুচাপের কারণে আবহাওয়ার তারতম্য বিরাজ করছে এবং গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা তৈরি হয়েছে। নিম্নচাপটি টাঙ্গাইল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে, এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্নয়ে দুর্বল হয়ে যাবে।’

মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘নিম্নচাপটির প্রভাবে চট্টগ্রাম, মংলা ও কক্সববাজার সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর সর্তকতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাকে সমুদ্র উপকূলের নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিম্নচাপের কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে গেছে। উপকূল পর্যন্ত পানি থাকায় শনিবার পর্যটকশূন্য ছিল পতেঙ্গা সমুদ্র উপকূল। সন্ধ্যায় ওই এলাকায় বেড়িবাঁধ সমান পানি ওঠে যায়।

সন্ধ্যার বৃষ্টিতে নগরীর হালিশহর, আগ্রাবাদ এক্সেসরোড, সিডিএ আবাসিক এলাকা, বাকলিয়া, চকবাজার, মুরাদপুরসহ অধিকাংশ এলাকায় হাঁটু পরিমাণ পানি উঠে যায় জানা গেছে। এতে ওই সব এলাকায় যাতায়াতে নগরবাসীকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তবে শনিবারের বৃষ্টিতে নগরীর কোথাও কোনও বড় ধরনের দুর্ঘটনা বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।

সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশন নিয়ন্ত্রণ কক্ষের অপারেটর মো. জাহাঙ্গীর আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'বৃষ্টিপাতে এখন পর্যন্ত কোনও বড় ধরনের কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সিআরবি সাত রাস্তার মোড় এলাকায় একটি গাছ উপড়ে পড়ে বলে আমরা খবর পেয়েছি। গাছটি সরিয়ে নিতে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।’