গর্ভে সন্তান রেখে সেলাই: তদন্ত প্রতিবেদন জমা

কুমিল্লাজমজ সন্তানের একটি বের করার পর আরেকটিকে ভেতরে রেখেই নারীর পেট সেলাই করে দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ গঠিত তদন্ত কমিটি রবিবার (২৯ অক্টোবর) কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সিলগালা অবস্থাতেই ওই প্রতিবেদন ঢাকাস্থ স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে। রবিবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মজিবুর রাহমান।
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মো. জালাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। রবিবার তদন্ত প্রতিবেদন সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।’
বিকালে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মজিবুর রাহমান বলেন, ‘সিলগালা অবস্থায় যে তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি, তা পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ঢাকায় স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘কোনও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই। তাই তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’
এদিকে, একই ঘটনায় দাউদকান্দির গৌরীপুর লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক শেখ হোসনে আরা বেগমসহ ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মজিবুর রহমান ও কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রাহমাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে রবিবার হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। আগামী ৭ নভেম্বর তাদের হাইকোর্টে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার হোমনা উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের আউয়াল হোসেনের স্ত্রী খাদিজা আক্তারকে (২২) গত ১৮ সেপ্টেম্বর দাউদকান্দির গৌরীপুর লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অপারেশন করা হয়। সেখানে খাদিজার পেটে একটি সন্তান রেখেই অপারেশন শেষ করার অভিযোগ ওঠে ডা. শেখ হোসনে আরার বিরুদ্ধে।
খাদিজার গর্ভে দুইটি সন্তান থাকলেও ডাক্তার শেখ হোসনে আরা অপারেশন করে একটি সন্তান বের করে অপরটি টিউমার বলে অপারেশন শেষ করেন। পরবর্তী সময়ে খাদিজা বাড়িতে যাওয়ার পর দীর্ঘ একমাস তার পেটে ব্যথা ছিল। এ নিয়ে চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে যান। পেটের ব্যথা বাড়তে থাকলে খাদিজা আক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য গত বুধবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। দ্বিতীয় অপারেশনের পর খাদিজার গর্ভের সন্তানটি মারা যায়।