রাবার ড্যামে ভাগ্য বদলে যাচ্ছে কৃষকের

Bandarban pic (3)বান্দরবান সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়নের শিলকখালে নির্মিত রাবার ড্যাম চালু হওয়ায় ভাগ্য বদলে যাচ্ছে ওই এলাকায় কয়েকশ কৃষক পরিবারের।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সাড়ে ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে ড্যামটি নির্মাণ করেছে। ড্যামটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১২ সালে। কিন্তু নানা সমস্যার কারণে ড্যামটি চালু করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি পাম্প হাউজ, দুই হাজার ৫শ’ ফুট ইরিগেশন ড্রেন নির্মাণ এবং চারটি ১০ হর্স পাওয়ারের পাম্প বসায়। পরে ২০১৬ সালের শুরুতে ড্যামটি চালু করা হয়।

Bandarban pic (2)স্থানীয়রা জানান, ড্যামটি চালু পর থেকেই বছরে দুইবার ফসল ঘরে তোলেন কৃষকরা। আগে শুধু বর্ষাকালে ফসল পেলেও শুষ্ক মৌসুমে জমি অনাবাদী থাকতো। ফলে অনেক সময় না খেয়ে বা অর্ধাহারে-অনাহারে থাকতে হতো।  কিন্তু ড্যাম চালুর পর এখন স্থানীয়রা নিজেদের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত ফসল বাইরে বিক্রি করে মুনাফা করতে পারছেন।

এ বিষয়ে চাষি মংনুচিং মার্মা বলেন, ‘আমি এ বছরের শুরুতে ১৬ কানি জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। প্রতি কানিতে ৮০ আড়ির বেশি ধান পেয়েছি। ফসল তোর পর দ্বিতীয়বার ধান চাষ করেছি এবং ধান পাকতে শুরু করেছে। আমি এবার অনেক ধান বাজারে বিক্রি করতে পারবো।’

Bandarban pic (1)চাষি উথোয়াই প্রু মার্মা বলেন, ‘আগে বর্ষায় পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে জমিগুলো পড়ে থাকতো। এখন পানির অভাব না থাকায় একই জমিতে দু’বার চাষ করতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। আশা করছি আমিও এবছর ভালো ফলন পাবো।’

এ বিষয়ে রাবার ড্যাম’র কেয়ার টেকার থোয়াইচিং মার্মা বলেন, ‘যখনই জমিতে পানি দরকার হয় তখনই ড্যামটি চালু করা হয়। অন্যসময় এটি বন্ধ থাকে। ফলে চাষের জন্য পানির অভাব হয় না।’

এ বিষয়ে রাবার ড্যাম পরিচালনা কমিটির সভাপতি চিংহাউ মার্মা বলেন, ‘এ রাবার ড্যামটি চালু হওয়ার পর থেকে এলাকার মানুষের খাদ্যের অভাব হয় না। এখন শুধু সবজি কিনলেই তাদের খাদ্যের চাহিদা পূরণ হয়।’

Bandarban pic (4)তিনি আরও বলেন, ‘তবে এখনও প্রয়োজনীয় সেচ পাম্পের অভাবে এলাকার শতভাগ কৃষককে সেচের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে প্রায় ৭০ ভাগ কৃষক ড্যামের আওতায় সেচ সুবিধা পাচ্ছেন। বিদ্যুৎ এবং পাম্প সুবিধা বাড়ানো হলে শতভাগ কৃষককে সেচের আওতায় আনা সম্ভব হবে।’

এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আজিজ বলেন, ‘ড্যামটি নির্মাণের পর সমিতির কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং সমিতির মাধ্যমে এটি পরিচালিত হচ্ছে। তবে এখনও ড্যামটির উন্নয়ন কাজ চলছে। আশা করি শিগগিরই নতুন পাম্প বসানোসহ অন্যান্য সমাস্যার সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সমন্বয় নেই এনজিওগুলোর মধ্যে