সিডর: ভোলায় স্বজনহারাদের কান্না থামেনি

সিডর

২০০৭ সালের এই দিনে ভোলাসহ উপকূলীয় জেলাগুলোর ওপর দিয়ে বয়ে যায় সুপার সাইক্লোন সিডর। সিডরের আঘাতে ভোলা সদর উপজেলাসহ চরফ্যাশন, মনপুরা ও বোরহানউদ্দিন উপজেলায়  ৪২ জন মারা যায়। আহত হয় হাজার হাজার মানুষ। ৫২ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেড়িবাঁধ ভেঙে যায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকার। নিখোঁজ হন ১৫ জেলে। ১০ বছরেও তাদের সন্ধান না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের কান্না থামেনি। কাটেনি ঘূর্ণিঝড় আতঙ্ক।

সিডরের আঘাতে ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চন্দ্র প্রসাদ, কুলগাজী ও গাছালীমোড় এলাকা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব গ্রামের স্বজনহারা পরিবারের মানুষগুলো এখনও শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। দিনটির কথা মনে পড়লে আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন তারা।

ভেলুমিয়া ইউনিয়নের কুলগাজী গ্রামের জেলে মো. মোস্তফা ও তার স্ত্রী রোশনা বেগম সিডরে তাদের দুই বছরের শিশু কন্যা রোজিনাকে হারিয়েছেন। মেয়ে হারানোর স্মৃতি আজও ভুলতে পারেননি। মেয়ের জন্য কাঁদতে কাঁদতে দিন কাটে তাদের। রোশনা বেগম বলেন, হারিয়ে যাওয়া মেয়ে এখন থাকলে অনেক বড় হতো। অন্যান্য ছেলে-মেয়ের মতো লেখাপড়া করতো

নিখোঁজ ব্যক্তিদের ফিরে আসার কোন সম্ভাবনা না থাকলেও স্বজনরা এখনও অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। যারা বেঁচে আছেন তারাও আতঙ্কে আছেন- আগামীতে ঝড় এলে কিভাবে তা মোকাবেলা করবেন তা ভেবে।  

মো. মোস্তফা বলেন, এখনও কোনও বাতাস বা ঝড় দেখলে ভয় হয়। কোনদিন আবার সিডরের মতো হয়। ঝড় হলে যাওয়ার কোনও জায়গা নেই। কাছাকাছি কোনও সাইক্লোন শেল্টার নেই।

ভোলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির উপ-পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন মিয়া জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ভোলায় এখনও ২০০সাইক্লোন শেল্টার প্রয়োজন।

ভোলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ইসিআরআরপি প্রকল্পের আওতায় গত এক বছরে ১৪টি নতুন সাইক্লোন শেল্টার নির্মিত হয়েছে।এমডিএসপি প্রকল্পের আওতায় ৪২টির নির্মাণ কাজ চলছে আরও ৯৭টি প্রক্রিয়াধীন আছে।