১০ ডিসেম্বর জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত হয় ভোলা

ভোলা

১০ ডিসেম্বর ভোলা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর সকালে ভোলায় অবস্থনরত পাকবাহিনী শান্তি কমিটির নেতা ও রাজাকারদের নিয়ে একটি কার্গো লঞ্চে পালিয়ে যায়। পালাবার সময় ভেদুরিয়া ও চর সামাইয়া এলাকায় তাদের আক্রমণ করে শান্তি বিভিন্ন চরে নামিয়ে দেয় মুক্তিযোদ্ধারা।



চাঁদপুরের কাছে মিত্র বাহিনীর বিমান হামলায় ঐ কার্গো লঞ্চটি ডুবে যায়। পাকবাহিনীর পালিয়ে যাওয়ার পর হাজার হাজার মানুষ ভোলায় প্রবেশ করে বিজয় উৎসব করে। মুক্তিযোদ্ধা ও জনগণ জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের ছাদে ওড়ায় জাতীয় পতাকা। তাদের জয় বাংলা স্লোাগানে মুখরিত হয় ভোলার আকাশ-বাতাস।
১৯৭১ সালের ২ মে পাকিস্তান বাহিনী বরিশাল থেকে বিনা বাধায ভোলা প্রবেশ করে। লঞ্চঘাটে তাদের ফুলের মালা দিয়ে অভ্যর্থনা জানায় তৎকালীন ভোলার মুসলিম লিগ নেতা শাহ মো. মতিউর রহমান, হাজী খোরশেদ আলম, ইলিয়াস মাস্টার প্রমুখ। পাকবাহিনী যুগীরখোলাস্থ ওয়াপদা রেস্ট হাউজে ক্যাম্প স্থাপন করে। কয়েক দিনের মধ্যে সুবেদার আবদুল মান্নান তার কয়েক জন অনুসারী নিয়ে পাকবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে। এই মান্নানই ট্রেজারিতে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধকে গুলি করে হত্যা করে। মুসলিম লিগ ও জামায়াত পাক বাহিনীর আহ্বানে ভোলায় শান্তি কমিটি গঠন করে। ভোলায় জামায়াতে ইসলাম ও ছাত্রসংঘ আল বদর বাহিনী গঠন করে। বদর বাহিনী, রাজাকার, শান্তি কমিটি পাক বাহিনীর সাথে গণহত্যা চালায। পাক বাহিনীর দোসর আবদুল্লাহ মৌলভী ছিল ভোলার ত্রাস।
পাক বাহিনী, রাজাকার, শান্তি কমিটি হিন্দুদের বাড়ি পোড়ায়, লুট, হত্যা ও ধর্ষণ চালায়। পাকবাহিনী রাজাকারদের সহযোগিতায শান্তি কমিটির সাহায্যে জেলার বিভিন্ন থানা থেকে স্বাধীনতা কর্মীদের ধরে এনে ভোলা খেয়াঘাট লঞ্চ টার্মিনালে লাইনে দাঁড় করে গুলি করে ও বেয়নেট চার্জ করে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিত। অনেককে ওয়াপদা রেষ্ট হাউজে নির্যাতন করে হত্যা করে ওয়াপদার পেছনে দেয়ালের বাইরে মাটি চাপা দেয়। এটি এখন ভোলার প্রধান বধ্যভূমি।